বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

নির্বাচনে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট

আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:০২ পিএম

অংশগ্রহণ নাকি বয়কট এমন দোটানার মধ্যেই আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিল সরকারবিরোধী বৃহত্তম রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবেই তারা নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেয় বিএনপিপ্রধান জোটটি। সংবাদ সম্মেলনে জোটের শীর্ষ নেতা ড. কামালের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনে অংশ নিলেও অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যে ৭ দফা দাবি আমরা দিয়েছি সেই দাবি থেকে আমরা সরে আসছি না। বরং তার সাথে যুক্ত হয়েছে নির্বাচনে তফসিল পিছিয়ে দেবার দাবি। এসময় বর্তমান তফসিল বাতিল করে এক মাস পিছিয়ে নতুন করে তফসিল ঘোষণার দাবি জানান তিনি।

জোটের এই মুখপাত্র বলেন, অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় দায়িত্ব সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আচরণের প্রতি ঐক্যফ্রন্ট কড়া নজর রাখবে। জনগণের দাবি মানা না হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় সরকারকেই নিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

তিনি বলেন, তড়িঘড়ি করে তফসিল ঘোষণা করা এবং সরকারি দলের তফসিল পেছানোর আহ্বান না জানানো প্রমাণ করে সরকারের উদ্দেশ্য ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনের বাইরে রেখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আদলে আরেকটি নির্বাচন করা।

সরকারি দল নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তফসিল ঘোষণার পরও বিটিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

ফখরুল বলেন, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এর ন্যূনতম শর্তও এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি। সকল দল ও জনগণের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়া প্রায় অসম্ভব। এরপরও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী নির্বাচন এই দেশের মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের নির্বাচন হবে। দশম সংসদ নির্বাচনের পর দেশে গণতন্ত্রের যে গভীর সংকট তৈরি হয়েছে সেই সংকট দূর করে আমাদের ঘোষিত ১১ দফা লক্ষ্যের ভিত্তিতে একটা সুখী বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে জনগণ পাশে থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ড. কামাল বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে যতবারই ঐক্য হয়েছে ততবারই বিজয় এসেছে। এবারও বিজয় হবে। দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হবে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষনেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর প্রমুখ।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্যকে সামনে রেখে এক মাস আগে ড. কামালের নেতৃত্বে সরকারবিরোধী বৃহত্তম জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যাত্রা শুরু করে। এরপর তারা সিলেট, রাজশাহী ও ঢাকায় জনসভা করে। দুই দফা সংলাপে বসলেও তাদের প্রায় সবগুলো দাবিই নাকচ করে দেয় সরকার। এমন পরিস্থিতির মধ্যে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিল জোটটি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত