তাইজুল ইসলামের বল যখন রেজিস চাকাভার ব্যাট ছুঁয়ে শর্ট লেগে দাঁড়ানো মুমিনুল হকের হাতে জমা পড়ল, তখনও জিম্বাবুয়ের ফলোঅন এড়াতে ১৯ রান দরকার। স্কোরবোর্ডে সফরকারীদের রান দেখাচ্ছিল ৯ উইকেটে ৩০৪। টেন্ডাই চাতারা না থাকায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস আসলে তখনই শেষ।
মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ২১৮ রানে এগিয়ে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েকে তারা ফলোঅন করাবে কিনা তা জানা যাবে বুধবার।
মিরপুর শেরে-বাংলা স্টেডিয়ামে আজ দিনটি ছিল তাইজুলের। কেবল তার কারণেই ফলোঅন এড়াতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। অবশ্য খানিকটা কৃতিত্ব মিডিয়াম পেসার আরিফুল হককেও দিতে হবে। কারণ ব্রেন্ডন টেলর আর পিটার মুরের ষষ্ঠ উইকেটের জুটি তিনিই ভেঙেছেন। পরে জিম্বাবুয়ের লেজ মুড়িয়ে দিতে বেশি সময় নেননি তাইজুল আর মেহেদী হাসান মিরাজ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। সেই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। আজ সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আবার ৫ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়লেন তাইজুল। তৃতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে সাকিব আল হাসান এবং এনামুল হক জুনিয়রের পর টেস্টে টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। শুধু কি তাই! মিরাজের বলে টেলরের স্লগ সুইপকে যেভাবে ক্যাচ বানিয়েছেন, তাতে কোনো প্রশংসাই তাইজুলের জন্য যথেষ্ট নয়।
তৃতীয় দিন জিম্বাবুয়ের পঞ্চম উইকেট পড়েছিল ১৩১ রানে। এরপর জুটি গড়েন টেইলর এবং মুর। ষষ্ঠ উইকেটে তারা ১৩৯ রান তুলে যখন জিম্বাবুয়েকে ভালো অবস্থায় নিচ্ছিল, তখনই আঘাত হানেন আরিফুল। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা মুরকে ফেরান তিনি। ৮৩ রান করা মুর তখন অবলীলায় রান করছিলেন। নতুন বলের মুস্তাফিজকেও খেলছিলেন সাবলীলভাবে।
এদিন ক্যারিয়ারের পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি করা ব্রেন্ডন টেলরকে ফেরান মিরাজ। জিম্বাবুয়ের ফলোঅনে আটকে যাওয়া তখনই প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। পরে তিন বলের ব্যাবধানে দুই উইকেট তুলে নিয়ে সেটাকে তরান্বিত করেন মিরাজ। চাকাভার উইকেট তুলে নিয়ে ফলোঅন নিশ্চিত করেছেন অবশ্য তাইজুলই।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে ১৯৪ বলে ১১০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন টেলর। ব্যক্তিগত ৯৪ রানে একবার সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি। উইকেটের পেছনে ক্যাচটা ধরতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ অবশ্য আজ বেশ কয়েকটি ক্যাচ ফেলেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৫২২/৭ (ইনিংস ঘোষণা)
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: (দ্বিতীয় দিন শেষে ২৫/১) ১০৫.৩ ওভারে ৩০৪ (চারি ৫৩, টেলর ১১০, মুর ৮৩; তাইজুল ৫/১০৭, মিরাজ ৩/৬১, আরিফুল ১/১০)