বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র মিকি মাউস নব্বই বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে আগামী ১৮ নভেম্বর। আর দিবসটি বড়সড় আয়োজনে পালন করবে দ্য ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি ও মিকির ভক্তরা। ১৯২৮ সালে এনিমেটেড শর্টফিল্ম ‘স্টিমবোট উইলি’র মাধ্যমে দুনিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত ইদুঁরটি প্রথমবার প্রকাশ্যে আসে। এরপর তাকে দেখা গেছে ফ্যাশন, শিশু শিক্ষা ও ভোটের ময়দানের। অর্থাৎ, মিকি মাউস একটি কার্টুন চরিত্রেরও বেশি কিছু।
মিকি মাউসের আবির্ভাবের পেছনে একটি ঘটনা আছে। এনিমেটর ওয়াল্ট ডিজনির তৈরি আরেকটি জনপ্রিয় চরিত্র ছিল ‘অসওয়াল্ড দ্য লাকি রযাস বিট’। খরগোশ চরিত্রটি নিয়ে ডিজনির বিরোধ হয় ব্যবসায়িক অংশীদারের সঙ্গে। পরে অসওয়াল্ড নিয়ে নতুন কিছু তৈরির স্বত্ব হারান ডিজনি। এ ঘটনার কারণে দৃশ্যপটে আসে মিকি ও তার সঙ্গী মিনি মাউস। ডিজনির কল্পিত রাজ্যে মিকি ও মিনি সুখী দম্পতি। প্রতিবছর ১৮ নভেম্বর চরিত্র দুটি ঘটা করে নিজেদের জন্মদিন পালন করে।
মিকি মাউসের সঙ্গে ‘হট ডগ’ শব্দটি সমার্থকই হয়ে গেছে প্রায়। ১৯২৯ সালে মুক্তি পায় সিনেমা ‘দ্য কার্নিভাল কিড’। এটি মিকিকে নিয়ে নবম সিনেমা আর যেখানেই প্রথমবার কোনো শব্দ উচ্চারণ করে। মিকি উচ্চারিত প্রথম শব্দটি ছিল ‘হট ডগ, হট ডগ’। চরিত্রটিকে সব মিলিয়ে ১৩০টি সিনেমায় দেখা গেছে। এর মধ্যে ১০টি সিনেমার এনিমেটেড শর্টফিল্ম বিভাগে অস্কার মনোনয়ন পায়, পুরস্কার জেতে ‘লেন্ড দ্য পো’। ১৯৩১ সালের ১২ মার্চ মিকি প্রথমবারের মতো একটি লাইভ শো’তে আসে। এছাড়া টিভি শো, কমিক স্ট্রিপ, ভিডিও গেমসহ নানা মাধ্যমে ছড়িয়েছে চরিত্রটি।
মিকি মাউস তৈরির সময় বিখ্যাত অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের কথা ভেবেছিলেন ওয়াল্ট ডিজনি। ১৯৩৫ সালে এনিমেটর ফ্রেড মুর নতুনভাবে সাজায় মিকিকে। তিনি যোগ করেন বড় চোখ, সাদা গ্লাভস ও ছোট নাক।
চরিত্রটিকে শুধু বিনোদনের উপকরণ ভাবলে ভুল হবে। মিকি মাউসকে নিয়ে তৈরি হয়েছে মিথস্ক্রিয়ামূলক টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘মিকি মাউস ক্লাবহাউস’। যেখানে আরও থাকে মিনি মাউস, ডোনাল্ড ডাক, ডেইজি, গোপি, কুকুর প্লুটো ও যান্ত্রিক সহকারী টুডলস। সৃজনশীল এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের নানা বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
ফ্যাশনেও মিকি মাউস দারুণ জনপ্রিয়। জিন্সের সঙ্গে তার ছবি সম্বলিত টি-শার্ট অনেকের গায়ে দেখা যায়। এর মধ্যে আছেন গায়ক জন মেয়ার, মডেল গিগি হাদিদ, অভিনেত্রী এমা রবার্টস ও সারাহ হাইল্যান্ডসহ অনেকে। মিকি এক্সেসরিজের মধ্যে আরও রয়েছে চাবির রিং, বেল্ট, হেয়ারব্যান্ড, ব্রেসলেট, ঘড়ি, মোজাসহ অনেক কিছু।
যুক্তরাষ্ট্রে মিকি মাউসের একটি ব্যবহার শুনলে মজা পাবেন। ভোটের ময়দানে কোনো প্রার্থী পছন্দ না হলে অনেক ভোটার ‘কেউ না’র বদলে মিকি মাউসের নাম লিখে থাকেন। জর্জিয়ার এক নির্বাচনী কর্মকর্তার মতে, যদি কোনো নির্বাচনে মিকি মাউস ভোট না পায়, সেটা একটা বাজে নির্বাচন। যতদূর জানা যায়, ১৯৩২ সালে নিউ ইয়র্ক শহরের মেয়র নির্বাচনে প্রথমবার পছন্দের প্রার্থী হিসেবে মিকি মাউসের নাম লেখা হয়।