নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাত, রক্তপাত অথবা প্রাণহানি হোক এমনটা চান না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। রাজধানীর নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের তিন দিনব্যাপী আচরণবিধি বিষয়ক ব্রিফিংয়ের শেষ দিনে সিইসি বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়ার সময় একথা বলেন।
ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, “এই ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে আপনাদের অবস্থান আমরা জানলাম। আমাদের অবস্থানও আপনারা জানলেন। আমাদের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ একটা নির্বাচন করতে হবে। অবাধ মনে ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবে, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি যাবে এবং বাড়ি গিয়ে নিরাপদে বসবাস করবে।”
শনিবার শুরু হওয়া তিন দিনের এ কর্মসূচিতে তিন ব্যাচে ৬৯১ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংশ নেন। শেষ দিনের শুরুতে তাদের উদ্দেশে নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচনের দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেদিনটা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক সময় আপনাদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। আপনাদের উস্কানিমূলক পরিস্থিতিতে ফেলে দিতে পারে। সে অবস্থাগুলো বুদ্ধিমত্তা, দক্ষতা, ক্ষিপ্রতা দিয়ে বুঝতে হবে।
তিনি আরো বলেন, কোন ঘটনা সত্য বা মিথ্যা তা আপনাদের বুঝতে হবে। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকর্মী যারা থাকবেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে হবে যাতে তাৎক্ষণিক সেই এলাকার অবস্থা জানতে পারেন।
বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সহনশীল থাকার নির্দেশ দিয়ে সিইসি বলেন, জেনে, বুঝে, শুনে অ্যাকশনে যেতে হবে। চরম অ্যাকশন যাকে বলা হয়, সেটা যতদূর পারেন নিজেদের বিবেচনায় নিয়ন্ত্রণ যদি করতে পারেন, তাহলে পরিবেশ শান্ত থাকবে।
নূরুল হুদা অংশগ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে আরো বলেন, আচরণবিধি ভালোভাবে রপ্ত করবেন। আচরণবিধি প্রয়োগ করতে গিয়ে যেন নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।
নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, সব প্রার্থী যেন প্রচারের সমান সুযোগ পায়। নির্ভয়ে আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।
আরেক কমিশনার কবিতা খানম ম্যাজিস্ট্রেটদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, নির্বাচনী মাঠ যাতে সুষ্ঠু থাকে এবং আইনানুগ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে বৈষম্য না ঘটে। শুধু কমিশন নয়, দেশের ভাবমূর্তি অনেকটাই আপনাদের উপর নির্ভর করছে।
কমিশনার রফিকুল ইসলাম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের বলেন, আপনাদের ভয় পাওয়ার কারণ নেই। আপনারা যদি বেআইনি কাজ করেন আমরা তা পর্যবেক্ষণ করব। কেউ ছাড় পাবেন না।
কমিশনার মাহাবুব তালুকদার বলেন, এবারের নির্বাচনে দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে ম্যাজিস্ট্রেটদের কাজ করার আহবান জানান তিনি।
এছাড়া নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) এর মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক বক্তব্য দেন।