মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের গণহত্যার শিকার হওয়ার দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি মানবাধিকার সংস্থা। মিয়ানমারের সোনবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের পক্ষে শরণার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে সংস্থাটি।
একটি বার্তা সংস্থার বরাতে চ্যানেল নিউজ এশিয়া জানিয়েছে, ওয়াশিংটনভিত্তিক পাবলিক ইন্টারন্যাশনাল ল’ অ্যান্ড পলিসি গ্রুপ (পিআইএলপিজি) আগামী সোমবার রোহিঙ্গা নির্যাতন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়টি উঠে আসবে। পিআইএলপিজি জানিয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করার যথেষ্ট তথ্য রয়েছে।
গত সেপ্টম্বরে পিআইএলপিজির গবেষণার ওপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। সেখানে বলা হয়েছিল, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পরিকল্পিত গণহত্যা, গণধর্ষণ ও অন্যান্য নির্যাতন চালিয়েছে।
তবে আন্তঃবিতর্ক ও পুরো প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের দায়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সরাসরি অভিযুক্ত করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
পিআইএলপিজি জানিয়েছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর চালানো যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার বিষয়টি তাদের প্রতিবেদনে উঠে আসবে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হলে তা দেশটিকে আরো চাপের মুখে ফেলবে। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথ আরো সুগম হবে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসন কিছুটা চিন্তিত বলে উল্লেখ করেছে সিএনএন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর নতুন করে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা, গণধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াও, লুটপাট চালানো হয়। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ এ নির্যাতনকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।