মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

নিজেকে ‘শুল্ক মানব’ দাবি ট্রাম্পের

আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৩৭ এএম

চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ অবসানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে গত শনিবার সমঝোতায় পৌঁছানোর দাবি করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে মঙ্গলবারই ওই সমঝোতা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে হোয়াইট হাউজের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নতুন করে হুমকি এবং চূড়ান্ত সমঝোতা নিয়ে একাধিক কর্মকর্তার ক্ষীণ আশবাদে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে।

এনডিটিভি জানায়, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ওই সমঝোতার ঘোষণাকে সোমবার উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় ভাসিয়েছিল বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু পরদিনই সেটা নেতিবাচক রূপ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার ডাউ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজের সূচক ছয়শোর বেশি তথা ২ দশমিক ৪ শতাংশ পড়ে যায়।

চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কে বড় ধরনের পরিবর্তন না আনে, তাহলে দেশটি থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আরো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে একাধিক টুইট করেছেন ট্রাম্প।

তিনি লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট শি এবং আমি চাই এই চুক্তি হোক, এবং সম্ভবত সেটা হবে। যদি না হয়, মনে রাখবে- আমি হলাম শুল্ক মানব।

যখন লোকজন কিংবা দেশগুলো আমাদের জাতির সম্পদ হাতিয়ে নিতে আসে, আমি চাই- এই সুবিধা পেতে তারা কিছু খরচ করুক। আমি সবসময় আমাদের অর্থনৈতিক শক্তিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেয়ার পথেই থাকব।

ট্রাম্পের এই টুইট তিন দিন আগে জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর দেয়া বক্তব্যের বেশ ভিন্ন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, একটি চুক্তির কাঠামোর বিষয়ে তারা সম্মত হয়েছেন যা ৯০ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান হবে।

ওই দিন ডিনারের পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এটা হবে একটা অবিশ্বাস্য চুক্তি। এটা হতে যাচ্ছে, নিশ্চিতভাবে। যদি এটা হয়, এটা হবে এখন পর্যন্ত করা সবচেয়ে সেরা চুক্তি।

বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, দুই দেশ পরবর্তী ৯০ দিন একে অন্যের রফতানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ না করতে সম্মত হয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে দুই দেশের বাণিজ্যিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কৃষি, জ্বালানি পণ্য আমদানি এবং গাড়ি আমদানির ওপর পুরোপুরি শুল্ক প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে চীন।

তবে গত ২৪ ঘণ্টায় চুক্তি নিয়ে আগের আশাবাদের জায়গা থেকে পিছু হটতে শুরু করেছে হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তারা। হোয়াইট হাউজের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের পরিচালক ল্যারি কাডলো বলেন, গাড়ি আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহারে প্রকৃত অর্থে কোনো চুক্তি হয়নি, তবে শেষ পর্যন্ত দুপক্ষের মধ্যে আস্থা বাড়ানোর পদক্ষেপ হিসেবে চীন এটা করবে বলে আমি আশা করি।

জি-২০ সম্মেলনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে ২০ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে এসব পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। আগামী ১ জানুয়ারি এই শুল্কের হার বাড়িয়ে ২৫ শতাংশে উন্নীত করার কথা ছিল।

বুয়েন্স আয়ার্সের বৈঠক সফল না হলে ২৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের চীনা পণ্যের বার্ষিক রফতানিতে ১০-২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত