সীমানা প্রাচীর ভাঙা। জরাজীর্ণ ভবন। ঢোকার পথে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এরসঙ্গে মাদকসেবী ও বহিরাগতদের আনাগোনা, দেখে মনেই হবে না এটা বরিশাল মহানগরের বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্থানীয়দের অভিযোগ, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হলেও তা ভেঙে ফেলছে মাদকসেবী ও বহিরাগতরা।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর ভাঙা। জরাজীর্ণ ভবনের একটি কক্ষে দুজন রোগী। দুজন চিকিৎসক নির্বিকার বসে আছেন। হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন সেবিকা এবং একজন ফার্মাসিস্ট কাজ করছেন। বিভাগের ছয় জেলার যক্ষ্মা রোগীদের ভরসা হাসপাতালটি হলেও চিকিৎসক, সেবিকা ও নিরাপত্তা না থাকায় রোগীর সংখ্যা একেবারেই কম।
আমানতগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আবুল বাসার অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই হাসপাতাল সেবা দেবে কীভাবে। ওর নিজেরই তো বুকে ব্যথা। চিকিৎসক নেই। সেবিকা নেই। প্রাচীর ভাঙা, জনবল নেই। নিরাপত্তাকর্মী নেই। সব নেইয়ের মধ্যে আছে বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। তার ওপর আছে বহিরাগতদের উৎপাত। এখানে সেবা নিতে আসতেও ভয় পান রোগীরা।’
দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ফারহানা বেগম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। দিনে রাতে যারা কাজ করেন তারা সবসময় ভীতসন্ত্রস্ত থাকেন। নাইট গার্ড নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এখানে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের বহির্বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন বলেন, ‘বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৮০ জন রোগী পরামর্শ নেন। এদের মধ্যে অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার হয়। কিন্তু জনবল না থাকায় জরুরি চিকিৎসার জন্য তাদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
গত তিন মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি মুক্তা বেগম। তিনি বলেন, ‘ছাদের অনেক স্থানে পলেস্তারা নেই। ল্যাট্রিনের অবস্থা খারাপ। সারা দিন বাইরের লোকজন আড্ডা দেয়।’
সিভিল সার্জন মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বক্ষব্যাধি হাসপাতালে কোনো নিরাপত্তাকর্মীর পদ নেই। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হলেও তা মাদকসেবী ও বহিরাগতরা ভেঙে ফেলে। মাদকসেবীদের আড্ডা কমাতে প্রশাসনিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’