বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

আমিও প্রেমে পড়েছি

আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৫:২০ এএম

আরও অনেক মানুষের মতো আমিও প্রেমে পড়েছি। প্রেমে তো মানুষ পড়বেই, পড়েও। আমারও তাই। তবে সেগুলো নিয়ে আলাদাভাবে বলার মতো কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। বরং আমার ছাত্রছাত্রীদের প্রেম, ভালোবাসা নিয়েই আমি অনেক বলি। প্রেম করে শিল্পীর সঙ্গে আমার বিয়ে। প্রথমে আমি দেখেছি শিল্পীর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব, এরপর তার সংবেদনশীলতা। আমার প্রতি যেমন, অন্যের প্রতিও সে দারুণ সংবেদনশীল। বন্ধু হলো অকপটে নিজের কথা বলার মতো একজন মানুষ। ভালোবাসার মানুষও তাই। প্রথমেই আবিষ্কার করলাম শিল্পী বড়–য়া সেই ধরনের একটি মানুষ, যে আমার কথাগুলো শুনতে চাইছে, সেগুলো অনুভব করে উত্তর করছে। ফলে সম্পর্কেও জন্ম হলো দুজনের। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত জাহাঙ্গীরনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভূগোল বিভাগের শিক্ষক। আমরা ১৯৮৫ সালে বিয়ে করি। এরপর থেকে আমাদের দুজনের একটি জীবনের শুরু। আমরা প্রেম করেছি, এটিকে আমি জীবনের খুব ভালো বিষয় হিসেবে দেখি, অন্যতম জরুরি বিষয় হিসেবে জানি। অনেকে ছেলেমেয়েকে প্রেম করতে দেখলে খেপে যান, নানা কথা বলেন। আরে, মাস্তানি, গুণ্ডামি, লুট, নেশা করার চেয়ে প্রেম ভালো নয়? তাতে পরিবেশও ভালো থাকে। প্রেম করতে দেখলে খারাপ লাগবে কেন? অদ্ভুত মানসিকতার এই সমাজ। প্রেম যত বাড়বে, অন্যদের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নত ও ভালো হবে। এমনকি দেশ সম্পর্কে তার মধ্যে ভালো বোধ, ভালোবাসা জন্ম নেবে। আস্তে আস্তে ভালোবাসা তাকে ভালোর দিকে নিয়ে যাবে। তাতে সব ধরনের ভালোই জায়গা করে নেবে, ভালোবাসার দিকে, ভালোর দিকে মানুষটিকে এগিয়ে দেবে। ফলে ভালো সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্ম হবে। তবে সেজন্য চর্চা করতে হবে। কথা শুনতে পারার মতো ধৈর্য থাকতে হবে, তাহলেই তো অন্যের প্রতি মমত্ব বাড়বে। তাকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। ভালো মন্দগুলো আলাদা করে ফেলতে হবে। এরপর ভালো দিক ধরে এগিয়ে যেতে হবে। এভাবেই মানুষের উত্তরণ ঘটে। ফলে পৃথিবীটাও তার কাছে উজ্জ্বল চোখে ধরা দেয়, সম্ভাবনাময় হয়ে ওঠে।

ভালোবাসা দিবস পালনের মানে হলো সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ আছে। পশ্চিমাদের কাছ থেকে সেটি পাওয়া। আমাদের নিজেদের নয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হলেও সেটি এই দেশের মানুষের স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস। সেটি কজন জানি? ফলে আমরা তো দেশ হিসেবে, জাতি হিসেবে, মানুষ হিসেবে দাঁড়াতে পারছি না। প্রতিরোধ হচ্ছে না, আসছি না, যেহেতু ইতিহাস চর্চা হচ্ছে না। অমানুষকে তো প্রতিরোধ করতেই হয়। সে জন্য আগের ইতিহাস জানা খুব জরুরি। ভালোবাসার প্রকাশ কোনো দিনে নয়, প্রতিদিন। মানুষ, প্রকৃতি, বন্ধু, নিজের জীবন, স্বজনের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হয়, সবকিছুকেই ভালোবাসতে হয়। মন্দকে মন্দ বলতে হয়। তাহলে ভালো বাড়ে। প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা জন্ম নিলে প্রকৃতিবিনাশ বন্ধ হয়, প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। আমি প্রকৃতিকে ভালোবাসি। মানুষকে ভালোবাসি বলে মানুষের ওপর রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও ব্যক্তির শোষণের বিরুদ্ধে লড়ি। সারা বছর ধরে সবসময় এই ভালোবাসাগুলোর মধ্যে থাকি বলে কাজগুলো সর্বক্ষণ করি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত