বর্তমান সরকারের শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন সময়ে বলছেন, দেশের সব গ্রামে তারা নগরের সুবিধা পৌঁছে দেবেন। এই কথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও আছে। পাশাপাশি আমরা দেশে নগরায়নের বিস্তারও দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু সে সব যে সুপরিকল্পিত তা বলা যাবে না। আমরা নিশ্চয়ই পুরো বাংলাদেশে ঢাকার মতো একটা দুঃসহ নগরের আদলে নগরায়ন চাই না। পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্থার করা সূচকে বসবাসের বিবেচনায় আমরা সবচেয়ে অযোগ্য একটা নগরে বসবাস করি। খারাপের দিক থেকে ঢাকা সবসময় ওপরের দিকে থাকে। এমনকি সিরিয়ার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশও আমাদের ওপরে থাকে। এসব সূচক দেখে আমাদের মন খারাপ লাগে। কিন্তু ঢাকার মতো নগর তৈরি করে গ্রামগুলোকে দূষিত করা, যানজট তৈরি করা, কালোধোঁয়া আর সিসাযুক্ত ভারী বাতাসের শহর কিন্তু আমরা চাই না। আমরা চাই গ্রামগুলো দূষণমুক্ত গ্রামই থাকুক, তবে সেখানে আধুনিক নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হোক।
কিন্তু আমাদের বিপুল জনসংখ্যাকে এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করি আমি। মানবজাতির ইতিহাসে কখনো কোথাও মানুষ আমাদের রাজধানী ঢাকার মতো এতবেশি জনঘনত্বে বসবাস করেনি। আগামীতে পুরো বাংলাদেশেরই এমন হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। ২০১৭ সালের মে মাসে প্রকাশিত ‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস অব বাংলাদেশÑএমএসভিএসবি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দেশের জনসংখ্যা বেড়ে এখন ১৬ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজারে উন্নীত হয়েছে। এই জরিপের তথ্যানুযায়ী দেশে পাঁচ বছরের ব্যবধানে ৪ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার কমেছে প্রায় ২২ ভাগ। মাতৃমৃত্যু হারও কমেছে। গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭১ দশমিক ৬ বছর। স্বাক্ষরতার হার বেড়ে হয়েছে ৭১ শতাংশ। তবে এক থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুমৃত্যুর হার গত তিন বছরেও কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্রতি হাজারে মৃত্যুহার ৯ জনে স্থির রয়েছে।
এখানে লক্ষণীয় যে, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবহার বাড়েনি পাঁচ বছরেও। তাছাড়া অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ইন্টারনাল মাইগ্রেশন বা অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি ‘জনসংখ্যা আমাদের এক নম্বর সমস্যা’। কিন্তু আমরা বছরের পর বছর ধরে কখনোই সরকারকে এই ‘এক নম্বর সমস্যা’ নিয়ে কথা বলতে দেখছি না। সরকার তো বলেই না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপি, জাসদ, বাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মতো দলগুলোকে আমরা কি কখনো এই জনসংখ্যা ইস্যু নিয়ে সমাবেশ, মানববন্ধন, সভা-সেমিনার করতে দেখেছি? জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো দাবিদাওয়া নিয়ে কোনো কর্মসূচি নিতে বা তাদের আন্দোলনে যেতে দেখেছি? উত্তরটা হলো ‘না’। পাশাপাশি উল্লেখ করা প্রয়োজন দেশের সিভিল সোসাইটি বা সুশীল সমাজ এবং নারী অধিকার আন্দোলনকর্মীদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নীরবতার কথাও। একটা দেশের এমন সবচেয়ে বড় সমস্যাটা নিয়ে সবার এই নীরবতার অর্থ হলো, এই সংকট নিরসনে আমরা একেবারেই সচেতন না এবং এর ফলে পুরো দেশটাও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। অর্থাৎ বাকি দেশেও ঢাকার মডেলেই নগরায়ন হতে থাকবে এবং দুঃসহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। ঢাকাকে তো আমি বলি যানজট-জলজট-জনজট নিয়ে এক ভজঘট নগর, দেশের বাকি অঞ্চলও কি এমন ভজঘটে পরিণত হবে?
আমরা যদি আবার একটু পরিসংখ্যানের দিকে তাকাই তাহলে দেখব, জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান-নিপোর্ট সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ বাস করছে। আর দেশের জনসংখ্যা বছরে ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে বাড়লেও শহর এলাকায় এই হার ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। তবে চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীÑ এই তিন প্রধান শহরে বর্তমানে যত মানুষ বাস করে, তার চেয়ে বেশি মানুষ গত ১৩ বছরে বেড়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায়। এই সংখ্যাটি ৬৭ লাখ। ঢাকা মহানগর এলাকায় প্রতিদিন এক হাজার ৪১৮ জন মানুষ বাড়ছে। বছরে যুক্ত হচ্ছে গড়ে ৫ লাখ সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ। এই হারে জনসংখ্যা বাড়তে থাকলে আগামী সাত বছর পর ঢাকার জনসংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের বিভিন্ন শহরের মধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান এগারোতম। কিন্তু ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা পৌঁছে যাবে ষষ্ঠ স্থানে। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকার জনসংখ্যা পৌঁছবে ২ কোটি ৭৪ লাখে। এসময় ঢাকা পেছনে ফেলবে করাচি, মেক্সিকো সিটি, কায়রো, সাও পাওলো এবং নিউইয়র্কের মতো শহরগুলোকে। সরকারি-বেসরকারি নানা সূত্র থেকে জানা যায় দেশে মোট নগরের সংখ্যা ৫৩২টি। এসব নগরের মোট আয়তন ১১ হাজার ২৫৮ বর্গকিলোমিটার। এটা বাংলাদেশের মোট আয়তনের প্রায় ৮ শতাংশ। আর এই ৮ শতাংশ জায়গায় দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ বাস করে। কিন্তু পরিকল্পিত নগরায়নের জন্য বাংলাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশন ও ৩২৪টি পৌরসভাসহ সব নগরের স্থানীয় সরকারে যোগ্য কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবলসমৃদ্ধ ‘নগর পরিকল্পনা বিভাগ’ থাকা উচিত হলেও বাস্তবে সেটি নেই।
এ তো গেল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নগর-শহরগুলোর পরিসংখ্যান। কিন্তু একটা নগর বলতে আমরা আসলে কী বুঝি? নগরের তো একটা দর্শন থাকবে। নগরে কবি-লেখক-শিল্পীরা থাকবে, দার্শনিক থাকবে, চাকরিজীবী ও শ্রমজীবী নানা শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষ যেমন থাকবে তেমনি সেখানে ভবঘুরেরাও থাকবে। ম্যামফার্ডের এক বিখ্যাত বইয়ে তিনি বলেছিলেন, শহর নাকি কাঁদে! ঢাকা শহরের কান্নাও কান পাতলে শোনা যাবে। ঢাকা শহর ফুঁপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। ঢাকা শহরের কোনো দর্শন আমি খুঁজে পাই না। আগে এটা ছিল মেট্রোপলিস। এখন হয়ে যাচ্ছে নেক্রোপলিস। নেক্রোপলিস মানে ভাগাড় শহর, মৃতের শহর। ঢাকার মতো একটা ইতিহাসসমৃদ্ধ নগরের কিন্তু এমন নেক্রোপলিসের দিকে যাত্রা করার কথা না। এটাকে রোধ করতেই হবে। আমাদের রাজধানী হওয়া উচিত প্রাণবন্ত একটা নগর। নগরে খোলামেলা জায়গা থাকবে, পার্ক থাকবে, শিশু-কিশোরদের জন্য খেলার মাঠ থাকবে, সামাজিক মানুষের জন্য যথাযথ কমিউনিটি সেন্টার থাকবে, নাগরিকদের জন্য সংস্কৃতিচর্চা ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু আমরা দিনদিন এসব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি, এসব বিষয়ে মনোযোগ দিচ্ছি না।
নগর হতে হবে পরিকল্পিত। কিন্তু ঢাকায় সেভাবে কোনো পরিকল্পনা অনুসরণ করা হয়নি, হচ্ছেও না। নগরের জনসংখ্যা নিয়েও ভাবতে হবে। একটা নগরে কারা থাকবে, কারা থাকবে না, কারা সেখানে আসবে সে সবও কিন্তু নগর পরিকল্পনার অংশ। ফলে আগামীর বাংলাদেশে নগরায়ন নিয়ে ঢাকার অভিজ্ঞতাকে আমাদের আমলে নিতে হবে। সেই নগরগুলোতে কারা থাকবে, কোন ধরনের জনগোষ্ঠীর জন্য সেই নগর তৈরি করা হবে সেটা ভাবতে হবে। ঢাকায় গত দুই-তিন দশকে যেভাবে তৈরি পোশাক কারখানা গড়ে উঠেছে সেটা কিন্তু একটা রাজধানীতে হওয়ার কথা না। এসব তৈরি পোশাক কারখানাগুলো তো বেশিরভাগই রপ্তানিমুখী। দেশের বন্দর এবং বন্দরমুখী মহসড়কগুলোকে কেন্দ্র করে এইসব কারখানা গড়ে তোলা হলে ঢাকার মতো একটা নগরে এই তিরিশ-চল্লিশ লাখা শ্রমজীবী মানুষকে নিয়ে আসার প্রয়োজন হতো না। এই অতিরিক্ত জন্যসংখ্যার চাপ কিন্তু রাজধানীকে নিতে হচ্ছে এবং এর নানারকম সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রভাবও ঢাকার জনজীবনে পড়ছে। অবশ্য এর যেমন নেতিবাচক দিক আছে তেমনি ইতিবাচক দিকও আছে। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ঢাকাকে বলছেন ‘সুযোগের শহর’ বা ‘সিটি অব অপরচুনিটি’। তার মতে, ১৮ লাখ পোশাকশ্রমিক, ১০ লাখ নির্মাণশ্রমিক এবং পাঁচ লাখ রিকশাচালকের জীবিকার সুযোগ করে দিয়েছে ঢাকা।
কিন্তু এই শ্রমিকদের সবাইকে ঢাকায় নিয়ে আসাটা ঠিক হয়েছে কি না সেই প্রশ্ন কিন্তু রয়েই যাচ্ছে। পাশাপাশি দেখা দরকার যে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হলো, তারা কোথায় কীভাবে থাকছে। এই শ্রমিকদের জন্যও কিন্তু আমরা কোনো পরিকল্পিত আবাসনের উদ্যোগ দেখিনি। আমরা বলি তারা বস্তিতে থাকে। আধুনিক নগরগুলোতে যে ‘স্ল্যাম’-এর কথা বলা হয় সেটা কিন্তু প্রচলিত অর্থে আমাদের পরিচিত ‘বস্তি’ না। সমাজবিজ্ঞানে স্ল্যাম বলতে যা বোঝায় সেটা হলো কারখানা বা শিল্প মালিকদের শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য তৈরি করে দেওয়া আবাসিক এলাকা। এটা কিন্তু সরকারের দায়িত্ব না। কারখানা মালিকদেরই দায়িত্ব। শ্রমিকরা এসব জায়গায় থাকবে এবং সেখান থেকে কাজে আসবে। এই স্ল্যামগুলোতে কমবয়েসি শিশুদের জন্য ‘ডে কেয়ার’-এর ব্যবস্থা থাকবে, স্কুল থাকবে এবং স্বাস্থকেন্দ্র থাকবে। এর ফলে কিন্তু শিল্প খাতের সঙ্গে শ্রমিকদের এক ধরনের ‘ওউনারশিপ’ তৈরি হয় যে, আমাদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানই আমাদের বাসস্থান বা থাকার জায়গার দায়িত্ব নিয়েছে, আমাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে এবং সন্তানদের শিক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে। আমি জাপানে দেখেছি টয়োটা কোম্পানির মালিক এক শ্রমিকের সন্তানলাভের পর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাবা-মায়ের জন্য ফুল পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক কিন্তু এমন হওয়ার কথা।
ঢাকায় আমরা কোনো পরিকল্পিত নগরের আস্বাদ পাই না এবং এখানকার অবকাঠামো থেকে শুরু করে গণপরিবহন কিছুই জনবান্ধব না। ‘স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান’-এর এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঢাকার ৫৪ শতাংশ মানুষ রিকশায় ও হেঁটে যাতায়াত করে। ফলে এখানে পথচারীবান্ধব রাস্তা তৈরির কথা। কিন্তু মাত্র ২০০ কিলোমিটার রাস্তায় ফুটপাত আছে। এটা মোট রাস্তার মাত্র ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। ৪৪ শতাংশ মানুষ গণপরিবহন ব্যবহার করে। এ অবস্থায়ও শহরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির জন্য প্রকল্প তৈরি ও অনুমোদন করা হচ্ছে। এর অর্থ হলো শহরের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন একেবারেই জনবান্ধব নয়। শহরের মোট আবাসনের ৯৩ শতাংশ ব্যক্তিগত। মাত্র ৭ শতাংশ সরকার কর্র্তৃক সরবরাহকৃত। উচ্চবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্তের জন্য রাজউক ১৩টি আবাসন প্রকল্প করেছে। অথচ ১৯৯৩ সাল থেকে কয়েকবার খসড়া প্রস্তুত করেও সব মানুষের জন্য একটি আবাসন নীতিমালা অনুমোদন করা যায়নি। পরিকল্পনার অভাব এবং এইসব অব্যবস্থাপনার কারণেই ঢাকা আজকের দুঃসহ নগরে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বে বসবাসের সবচেয়ে অযোগ্য নগর হিসেবে ঢাকা পরিচিতি পেয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের-ইআইইউ এক প্রতিবেদনে স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা ও অবকাঠামো— এই পাঁচটি বিষয়ে ৩০টি সূচক ধরে তৈরি প্রতিবেদনে ১৪০টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে অযোগ্য শহর হিসেবে বিবেচিত হয় ঢাকা।
রাজধানী ঢাকার এই অভিজ্ঞতাকে যথাযথভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের আগামীর পরিকল্পনা করতে হবে। ঢাকাকে বাসযোগ্য করার জন্য অবিলম্বে একটা অ্যাকশন প্ল্যান নেওয়া যেমন জরুরি, তেমনি সারা দেশের নগরায়নের জন্যও ঢাকার শিক্ষাকে কাজে লাগানোটা জরুরি বলে মনে করি। একইসঙ্গে দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অবিলম্বে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে একটা জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও তার কঠোর বাস্তবায়নের দিকে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। শুনতে বিপ্লবী শোনালেও আমরা কি ভবিষ্যতে ঢাকা থেকে রাজধানী সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করতে পারি না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিকল্পনায় ঢাকা থেকে সেনানিবাস, বিজিবির সদর দপ্তর, নৌবাহিনীর সদর দপ্তর, কোস্ট গার্ডের সদর দপ্তরসহ এমন অনেক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমরা কি এসব সংস্কারসহ এখন ঢাকা থেকে পদ্মা বা যমুনার অপর পারে রাজধানী সরিয়ে নেওয়ার মতো চিন্তা করতে পারি না? নইলে ঢাকা মহানগরের মেট্রোপলিস থেকে নেক্রোপলিসের দিকে যাত্রা আমরা ঠেকাতে পারব না।
লেখক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক এবং কলামনিস্ট