প্রথম ম্যাচে ফিলিপাইনকে ১০-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে সম্ভাবনার কথা জানিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। গতকাল স্বাগতিক মিয়ানমারকে ১-০ গোলে হারিয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করেছে মেয়েরা। এশিয়ার সেরা আট দেশকে নিয়ে চলতি বছর সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্ব। গত বছর নভেম্বরে অলিম্পিক বাছাইয়ে মিয়ানমার জাতীয় দলের কাছে ৫-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ জাতীয় দলের মেয়েরা। তাই গতকাল ম্যাচের আগে কিছুটা ভয়ে ছিল মারিয়া মান্দারা। ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে শেষ হয়। আক্রমণ-প্রতিআক্রমণ চললেও কেউ গোল পায়নি। শুরু থেকে বাংলাদেশের মেয়েরা দারুণভাবে রক্ষণে পাহারা দিচ্ছিল। দ্বিতীয়ার্ধের ৬৮ মিনিটে মনিকা চাকমার গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সেই গোল আর শতচেষ্টা করেও শোধ করতে পারেনি মিয়ানমার।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্দা বলেছেন, ‘গত ম্যাচের চেয়ে আজকের (শুক্রবার) ম্যাচটি অনেক কঠিন ছিল। অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে ম্যাচে। অনেক কঠিনের মধ্য থেকেই আমরা ম্যাচ জয় করেছি।’ প্রতিপক্ষের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা জানি মিয়ানমার অনেক শক্তিশালী দল। যখন সিনিয়র দল নিয়ে এখানে খেলতে এসেছিলাম, তখন ওরা আমাদের থেকে অনেক শক্তিশালী ছিল। ওরা আমাদের থেকে র্যাংকিংয়েও ওপরে। এজন্য আমরা অনেক কঠিন ট্রেনিং করেছি। যে কারণে সফল হতে পেরেছি।’
এশিয়ার সেরা মঞ্চে খেলার যোগ্যতা অর্জনের পর দেশ রূপান্তরকে বাংলাদেশ অনূর্ধŸ-১৬ দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, ‘আগেরবার আমরা চূড়ান্ত পর্বে খেলেছিলাম। এবারও তাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল চূড়ান্ত পর্বে কোয়ালিফাই করা। দেশ থেকে আসার আগে আমরা সেটিই বলে এসেছিলাম। মেয়েরা যা করে দেখিয়েছে। এই সাফল্য শুধু আমাদের দলের নয়, পুরো দেশের মানুষের সাফল্য।’ মিয়ানমারের আধিপত্য নিয়ে খেলা প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, ‘প্রথম ২০-২৫ মিনিট আমাদের মেয়েরাই এগিয়ে ছিল। এরপর মিয়ানমার ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আমি আগেই বলেছিলাম মিয়ানমার শক্তিশালী দল। তারা স্বাগতিক সুবিধাটা কাজে লাগিয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা খেলা থেকে হারিয়ে যায়নি। আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলেই জয় ছিনিয়ে এনেছে। যার পুরো কৃতিত্ব মেয়েদের দিতে হবে।’
শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েরা খেলবে চীনের বিপক্ষে। সেই ম্যাচ নিয়ে ছোটনের মন্তব্য, ‘আমরা চূড়ান্ত পর্বে কোয়ালিফাই করে ফেলেছি। তাই আমাদের আর হারানোর কিছু নেই। চীন বিশ্বের অন্যতম সেরা শক্তিগুলোর একটি। তবে আমাদের দল শেষ দুই বছরে অনেক সাফল্য পেয়েছে। অনেক শিরোপা জয় করেছে। চীনের বিপক্ষে ম্যাচে তাই নিজেদের যাচাই করার সুযোগ যে আমরা কতদূর এগোলাম। আর চূড়ান্ত পর্বে যেহেতু উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দলের বিপক্ষে খেলতে হবে, তার আগে এই ম্যাচটি ভালো প্রস্তুতি হবে বলে আমি মনে করি।’
গতকালের সাফল্যের কারণে এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে দেখা যাবে বাংলাদেশ মেয়েদের। আগামী সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসবে। গত আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল উত্তর কোরিয়া। সেখানেও খেলেছিল গোলাম রব্বানীর দল। এবার দ্বিতীয়বার মতো খেলবে তারা। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে সরাসরি খেলবে উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং স্বাগতিক থাইল্যান্ড। বাছাই পর্বে এক ম্যাচ হাতে রেখে বাংলাদেশ গতকাল চূড়ান্ত পর্বের খেলা নিশ্চিত করে। আগামীকাল বাছাই পর্বে শেষ ম্যাচে চীনের বিপক্ষে খেলবে মেয়েরা।