ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রতিষ্ঠাকালীন হলের একটি সলিমুল্লাহ মুসলিম হল। ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে এগিয়ে থাকলেও ঐতিহাসিক এই হল আবাসনসংকট, নিম্নমানের খাবার, মাদকসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত।
ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন হল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থীরা।
আগামী ১১ মার্চ ঢাবির কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচন। এতে অংশ নিতে ছাত্রলীগ, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন জোটভুক্ত দল প্যানেল দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী, বহিরাগতদের অবস্থান, নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, অপরাজনীতি, মাদক সমস্যা, পুরনো ভবন, হল গ্রন্থাগারে বইয়ের অভাব এখানকার প্রধান সমস্যা। এর মধ্যেও স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠন বাঁধন, ডিবেটিং ক্লাবের কার্যক্রমে এগিয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল।
ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টনসহ খেলায় নৈপুণ্যের ছাপ রেখেছেন এ হলের শিক্ষার্থীরা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্র হলের মধ্যে এটিতে আসনসংকট সবচেয়ে বেশি। অনেক ছাত্রকে বারান্দায় থাকতে হয়। এতে শারীরিক অসুস্থতাসহ তাদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটে। নিয়ম মেনে আসন প্রদান, নতুন ভবন তৈরি করা গেলে আবাসনসংকট কিছুটা হলেও কমবে। এ ছাড়া খাবারে ভর্তুকি, নেতাদের ‘ফাউ খাওয়া’ বন্ধ, ক্যান্টিন সংস্কার করা প্রয়োজন বলে ছাত্ররা মনে করেন।
হল অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দোতলা হলে ১৪৮টি কক্ষে ৪০২টি আসন রয়েছে। এসব কক্ষে প্রায় ১ হাজার ২০০ ছাত্র থাকেন। হলে ৬০টি একক শয্যার কক্ষের ৯০ শতাংশ কক্ষই বহিরাগতদের দখলে। এর বাইরে দুই শয্যার ১২টি, তিন শয্যার দুটি ও চার শয্যার ৭৪টিসহ ৮৮টি কক্ষ রয়েছে। ছাত্রত্ব শেষ, এমন অনেকেই এখানে থাকেন।
জানতে চাইলে হল সংসদের ছাত্রলীগের ভিপি প্রার্থী মুজাহিদ কামাল উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচিত হলে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে এই সংকটগুলো দূর করব। এ ছাড়া ছাত্রদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিকাশে উদ্যোগ নেব।’ ছাত্রলীগের জিএস প্রার্থী জুলিয়াস সিজার বলেন, ‘পাঠ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিচর্চায় আমি এটিকে ক্যাম্পাসের মডেল হল বানাতে চাই।’
জিএস পদে ছাত্রদলের প্রার্থী আল আমিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আবাসিক সংকট সমাধানের পাশাপাশি ভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষার্থীরা যাতে এখানে থাকতে পারেন সেজন্য কাজ করব।’ ছাত্রদল থেকে মনোনয়ন পাওয়া চারজনের মধ্যে ‘ছাত্রত্ব না থাকায়’ ভিপি পদপ্রার্থী নাহিদুজ্জামান শিফনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে প্রশাসন। সংগঠনটির এজিএস প্রার্থী মো. জুবায়ের আহাম্মেদ ও সাহিত্য সম্পাদক প্রার্থী মাহিদুল ইসলাম জয়।
এখানে ভিপি পদে আরও আছেন আদনান আজিজ চৌধুরী, জিএস পদে আবু সায়েম রাব্বী ও ফরিদ হাসান। এ ছাড়াও একাধিক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।