টি-টোয়েন্টিতে বরাবরই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। তা দ্বিপক্ষীয় সিরিজই হোক আর টুর্নামেন্টই হোক। সেই চ্যালেঞ্জ টপকে টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ আসরে টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোকে হারাতে ব্যর্থ টাইগাররা। একমাত্র উইন্ডিজ ছাড়া আর কোনো বড় দলের সঙ্গে জেতেননি মুশফিকুর রহিমরা। কিন্তু এই ফরম্যাটে টানা তিন সিরিজ জিতে এখন নিজেদের ভিন্ন জায়গায় দেখছেন মুশফিক। আর তাই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের ভালো কিছু করার সেরা এবং সঠিক সময় বললেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
চট্টগ্রামে দারুণ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ঢাকা ফিরেছেন মুশফিক। গতকাল ‘হাইজ্যাট মুশি দ্য ডিপেন্ডেবল’ নামক একটি গেমিং অ্যাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এবার ভালো করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মুশফিক। ২০১৬ বিশ্বকাপের সঙ্গে এবার নিজের পার্থক্য কী এমন প্রশ্নের জবাবে কৌতুক করেই মুশফিক বলেন, ‘পার্থক্য বলতে দাড়িগুলো একটু বড় হয়েছে... এটা বলতে পারেন (হাসি)। চুল একটু কমে গেছে... এটা বলতে পারেন (হাসি)।’ এরপরই পেশাদার ভাবে জানালেন, ‘তবে ক্রিকেটার হিসেবে একজন যত খেলবে ততই শিখবে, আমিও এর ব্যতিক্রম কিছু না। প্রতিদিন চেষ্টা করি নিজেকে উন্নত করার। আমি যত উন্নতি করতে পারব বাংলাদেশ দলকে তত দিতে পারব। টি-টোয়েন্টিতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করা সহজ না। তবে এবার সঠিক এবং সেরা সময়। যেহেতু শেষ তিনটা সিরিজে আমরা জিতেছি দুটা হোমে এবং একটা অ্যাওয়েতে; তো এটা অনেক বড় একটা আত্মবিশ্বাস আমাদের দল হিসেবে। যখন দল হিসেবে খেলি সেটা আমাদের পক্ষে আসবে। অবশ্যই আমি চেষ্টা করব যে আগামীবারের তুলনায় এবার যেন আরও বেশি ভালো করতে পারি এবং দলের জয়ে যেন অবদান রাখতে পারি।’
মুশফিকের চোখে টি-টোয়েন্টিতে কোনো ফেভারিট নেই। নির্দিষ্ট দিনে যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। সাবেক অধিনায়কের বিশ্বাস, শেষ তিনটি সিরিজ জিতে বিশ্বকাপের আত্মবিশ্বাসটা নিয়েছে বাংলাদেশ। এবার মূল আসরে ফল দেখানোর পালা। তার আগে কোয়ালিফাইং রাউন্ডকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন মুশফিক। সবশেষ সিরিজগুলোর সাফল্য নিয়ে এই চ্যালেঞ্জ জিততে চান তিনি। নিউজিল্যান্ড সিরিজের পর বিশ্রামটাও খুব কাজে লেগেছে বলে জানান। তাতে বেশ চাঙ্গা হয়েই ওমানে অতিরিক্ত ক্যাম্পে যোগ দিতে পারছেন। আগে ওমানে খেলার অভিজ্ঞতা না থাকলেও দুবাই বা শারজাতে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কোয়ালিফাই রাউন্ডে সফল হতে চান মুশফিক।
তার আগে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতেই ‘এ’ দলের হয়ে দুটি ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক। দুই ম্যাচেই রান পেয়েছেন দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটসম্যান। তবে তার লক্ষ্যটা ছিল ম্যাচ অনুশীলনে থেকে নিজেকে তৈরি করা। মুশফিক জানেন অভিজ্ঞ হিসেবে তার ওপর সবার প্রত্যাশাও বেশি। তাই নিজেকে সব সময় প্রস্তুত রেখে দলের প্রয়োজন মেটাতে চান, ‘চার-পাঁচটা বড় টুর্নামেন্ট খেলে ফেলেছি যখন অবশ্যই সবার প্রত্যাশা একটু চাপ সৃষ্টি করবেই। স্বাভাবিক সেভাবেই নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করি এবং দেওয়ার চেষ্টা করি। অনেক সময় সেটা হয়ে ওঠে না, আবার অনেক সময় দলের জন্য যতটুকু দরকার তা দিতে পারছি যেটা খুব ভালো ব্যাপার। আশা করছি বিশ্বকাপে যেন সামনে থেকে পারফরম করতে পারি এবং দল হিসেবে যেন চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়াই করতে পারি।’
ভালো করার জন্যই চট্টগ্রামে পাড়ি জমানোর আগে মুশফিক ছুটে যান ছোটবেলার কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিমের কাছে। সেখানে টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের ধরন ও নিজের ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে কাজ করেছেন। তাতে যে কাজ দিয়েছে তার প্রমাণ চট্টগ্রামের দুটি ইনিংস।