বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

অন্যায় করতে চাওয়া সেই এমপির পদ বাতিল দাবি

আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৭ এএম

দুর্নীতির মাধ্যমে নির্বাচনের খরচ তোলার ঘোষণা দিয়ে আলোচিত নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিলের দাবি উঠেছে। গতকাল সোমবার বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে মালঞ্চি বাজারে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা এ দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এমপি কালাম প্রকাশ্যে দুর্নীতি করে ভোটের খরচ তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের যে নির্বাচনী আইন রয়েছে তিনি তা ভঙ্গ করেছেন। সেই সঙ্গে সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি যে শপথ নিয়েছেন ওই বক্তব্যের মাধ্যমে তাও ভঙ্গ করেছেন।

বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম ঠান্ডুর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শরিফুর ইসলাম, পাঁকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম মিলন, যুব মহিলা লীগের নেত্রী সুফিয়া বেগম প্রমুখ।

এদিকে একই স্থানে একই সময়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের সমর্থক বাগাতিপাড়া আওয়ামী লীগের আরেকটি অংশ পাল্টা কর্মসূচি পালন করে। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয় মালঞ্চি বাজার এলাকায়। মালঞ্চি স্টেশনের পূর্ব পাশে সাবেক সংসদ সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম বকুল সমর্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আর পশ্চিম পাশে অবস্থান নেয় বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য সেখানে যান।

এর আগে গত ২৬ মার্চ নাটোরের লালপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আবুল কালাম দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে খরচ হওয়া ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা তোলার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেতন-ভাতা বাবদ ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা আয় করেছি, যা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খরচ হয়েছে। এ টাকা যেকোনো মূল্যে তুলব। এতে যদি কোনো অনিয়মও হয় তাও করব।’

একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা। আবুল কালাম আজাদ নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুলকে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

আবুল কালাম আজাদ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমার বিগত পাঁচ বছরের (বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে) বেতন-ভাতার ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না আর ভবিষ্যতেও থাকবে না। তবে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে (দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে), যা আমি তুলব। এটা আমি তুলব, যেভাবেই হোক। এটুকু অন্যায় করব আর করব না।’

এমপি কালাম আরও বলেন, ‘সে সময় (দশম জাতীয় সংসদে এমপি থাকাকালে) আমার একটি টাকাও খরচ হয়নি। ২৫ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছি। ট্যাক্স-ফ্রি গাড়ি কিনেছি ২৭ লাখ টাকা দিয়ে। ইচ্ছা করলে আমি ১ কোটি টাকা দিয়ে গাড়ি কিনতে পারতাম। কিন্তু আমার যেহেতু টাকা নেই, আমি ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। এবার আমি কিনব, ওই টাকা দিয়ে কিনব। ওই টাকা আমি তুলে নেব। নিয়ে আর কিছু করব না। খালি এই ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা তুলব।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত