সিসিটিভি কেলেংকারির অভিযোগে সিলগালা করে দেয়া হয় রাজধানীর ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের ধানমণ্ডি শাখার কার্যক্রম। তবে এ ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই সিলগালা ওই শাখাটির কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও বিদেশের প্রতিষ্ঠানে করা ফার্টিলিটি পরীক্ষার কাগজপত্রকে সন্তানসম্ভবার কাগজ হিসেবে দেখিয়ে জামিন নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এ ঘটনার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবু তালেব জানান, ভূয়া মেডিকেল প্রতিবেদন বিষয়ে খোজখবর নেয়া হচ্ছে। সিলগালা প্রতিষ্ঠান আইনি অনুমোদন ছাড়া খোলার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্যদিকে জামিনে থাকা ফারনাজ আলমের মন্তব্য জানতে তাকে ফোন করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ও প্রশ্ন শুনে ফোন কেটে দেন।
জানা গেছে, রাজধানীর ধানমন্ডিতে উইমেন্স ওয়ার্ল্ড বিউটি পার্লার এন্ড স্পা এর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে নারীদের স্পর্শকাতর ভিডিও ধারণ এবং সংরক্ষণের। গত ২৬ শে ডিসেম্বর একজন ভুক্তভোগী নারী হঠাৎ লক্ষ্য করে যে তার স্পর্শকাতর ভিডিও সংরক্ষণ হচ্ছে। তিনি ৯৯৯ কল করে মৌখিক অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ উইমেন্স ওয়ার্ল্ডে অভিযান চালায় এবং ঘটনার সত্যতা খুঁজে পায়। অনেক নারীর স্পর্শকাতর ভিডিও খুঁজে পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে আটটি সিসি ক্যামেরা ও ক্যামেরার ডিভিআর জব্দ করে। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক মো. একরামুল হক বাদী হয়ে উইমেন্স ওয়ার্ল্ডের দুই মালিকসহ পাঁচজনের নামে মামলা দায়ের করেন।
এতে উইমেন্স ওয়ার্ল্ড এর পরিচালক ফারনাজ আলমসহ আরো পাঁচজনকে আসামি করা হয়। তিনজনকে ঘটনাস্থলে থেকে গ্রেফতার করা হয়। পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় ফারনাজ আলমকে গ্রেফতারের অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু ফারনাজ আলম ওই সময় দুবাই থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। গত ১৪ই জানুয়ারি ২০২৪ পরিচালক ফারনাজ আলম দুবাই থেকে দেশে ফেরার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে ধানমন্ডি পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। ধানমন্ডি পুলিশ তাকে বিজ্ঞ আদালতের কাছে সোপর্দ করে। বিজ্ঞ আদালতের কাছে আইনজীবীর মাধ্যমে ফারনাজ আলম জানান যে, তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্তা এবং তার হৃদ রোগের সমস্যার কথা উল্লেখ করেন। বিজ্ঞ আদালত তার অন্তঃসত্ত্বা এর বিষয়টি এবং হৃদরোগের সমস্যাটি আমলে নিয়ে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
তবে অভিযোগ উঠেছে তার প্রেগনেন্সি প্রতিবেদন ঠিক নয়। যে কাগজ আদালতে জমা দেয়া হয়েছে তা দুবাইয়ের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে আনা ফার্টিলিটি টেস্ট রিপোর্ট।
জানা গেছে, যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছোট ভাই গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলের বউ এই ফারনাজ আলম সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পুত্রবধূ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি ও অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ২০১৯ সালে গিয়াস উদ্দিনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। বেশ কিছু দিন কারাভোগের পর অসুস্থতার কারণে জামিন পেয়ে দেশের বাইরে গিয়ে আর ফেরেননি গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী।