শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

কোমলতা ও লজ্জাশীলতা মুমিনের বৈশিষ্ট্য

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৪ এএম

আচরণের শোভা সৌজন্য। মানুষ শোভার অনুরাগী। সবাই সবকিছুতে সৌন্দর্যমণ্ডিত ও সুশোভিত কিছু চায়। ইসলামে বিনয়, কোমলতা ও লজ্জাশীলতা অবলম্বন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিনয় বলতে আমরা বুঝি, নিজেকে ছোট এবং অন্যকে বড় মনে করা, ছোটদের স্নেহ এবং বড়দের সম্মান করা, পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, কারও কটু কথার জবাবে কোমলাচরণ করা এবং প্রভৃতি হিতকর কাজ করা। বিনয় আল্লাহর কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয়। এটি মুমিনের বৈশিষ্ট্য এবং মর্যাদা লাভের বিশেষ মাধ্যম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘আর আল্লাহর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে বিনয়ের সঙ্গে চলাফেরা করে।’

আল্লাহতায়ালা কোমল। তিনি কোমলতা পছন্দ করেন। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও অত্যন্ত কোমল ছিলেন। তাই তো তিনি সাহাবিদের কোমলতায় সৌন্দর্যমণ্ডিত করার শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন। সব ধরনের লেনদেন ও আচার-আচরণের ক্ষেত্রে বিনয় ও কোমলতা প্রদর্শন ইসলামের অন্যতম শিক্ষা। হাদিসে এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হজরত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহতায়ালা স্বয়ং নম্র। তিনি নম্রতাকেই ভালোবাসেন। তিনি কঠোরতার ওপর যা দান করেন না তা নম্রতার জন্য দান করেন। নম্রতা ছাড়া তা অন্য কিছুতেই দান করেন না। -সহিহ মুসলিম

সরলতা মুমিন মুসলমানের জীবনের ভূষণ। পক্ষান্তরে কুটিলতা হচ্ছে পাপিষ্ঠ হওয়ার নিদর্শন। হাদিসের ভাষ্যমতে প্রকৃত ইমানদার ব্যক্তি সরল ও ভদ্র হয়ে থাকে। আর পাপী ব্যক্তিরা হয়ে থাকে প্রতারক ও নিচু প্রকৃতির।

মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য বিনয়ী, নম্র ও ভদ্র হওয়া। আল্লাহতায়ালা এমন গুণের অধিকারী বান্দাদের বেশি পছন্দ করেন। কেননা এসব মহান আল্লাহরই বৈশিষ্ট্য। হাদিসে এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, একদা রাসুল (সা.) তাকে বললেন, নম্রতাকে তোমার নিজের জন্য আবশ্যক করে নাও এবং কঠোরতা ও নির্লজ্জতা থেকে নিজেকে রক্ষা করো। কেননা যে জিনিসের মধ্যে নম্রতা আছে, সে নম্রতাই তার সৌন্দর্য বৃদ্ধির কারণ হয়। আর যে জিনিস থেকে নম্রতাকে প্রত্যাহার করা হয় সেটা ক্রটিপূর্ণ হয়ে যায়। -সহিহ মুসলিম

আল্লাহতায়ালা নিজের যে গুণ বান্দাদের ধারণ করার সুযোগ দিয়েছেন সবারই উচিত তা যথাযথভাবে নিজের ভেতর ধারণ করা এবং দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা অর্জন করা। আর এতেই কল্যাণ নিহিত।

মুমিনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো লজ্জাশীলতা। হাদিসে এসেছে, লজ্জাশীলতা ইমানের অংশ। বাস্তবিক অর্থেই ইমানের সঙ্গে লজ্জার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কেননা লজ্জা মুমিনকে অন্যায়, অশ্লীল ও অহিতকর কাজ থেকে রক্ষা করে এবং সৎকাজের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাই দেখা যায় লজ্জা ইমানের সহায়ক ভূমিকা পালন করে। লজ্জাহীন মানুষ যে কোনো গর্হিত কাজ নির্দ্বিধায় করতে পারে। এমনকি সে পশুত্বের ঘৃণ্য চরিত্রেও নেমে যেতে পারে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত