নারীর নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা
আজমেরী হক বাঁধন | ২৬ মার্চ, ২০২২ ০০:০০
ব্যক্তিজীবনের কথা বললে স্বাধীনতার অর্থ আমি খুব যে আলাদা করে জানি এ রকম না। কারণ আমার তো জীবনের ৩৪ বছর কেটে গেছে পরাধীনতার শৃঙ্খলে। আমার মনে হয়, মানুষ হিসেবে আমার যে অধিকারগুলো আছে সেটাই তো প্রকৃত স্বাধীনতা। সর্বশেষ চার বছর ধরে আমি চেষ্টা করছি আমার স্বাধীনতা, আমার অধিকার বুঝে পেতে। সেখানে আসলে নানা বাধা আছে। দিনশেষে আমরা মানুষ হিসেবে তো পূর্ণ স্বাধীনতা পাচ্ছি না। আর দেশের স্বাধীনতার কথা বললে সেটিও কিন্তু ওই অধিকার আদায়ের জন্য। আমাদের দেশের যেসব সূর্যসন্তান দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন তারা তো অধিকার আদায়ের জন্যই হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। আমাদের যুগের পর যুগ প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছিল বলেই একটা সময় আমরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। এটা আমাকে ভীষণভাবে আন্দোলিত করে। অবশ্যই আমি বাংলাদেশি হিসেবে গর্বিত। যারা দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষের ভালোর কথা চিন্তা করে তাদের সর্বস্ব দিয়ে যুদ্ধ করেছেন, শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা। তারা দেশ স্বাধীন করেছেন বলেই আজ আমরা যার যার জায়গায় অবস্থান করছি। যদি তা না হতো হয়তো সবার জীবনরেখাই ভিন্ন হতো।
আপাতদৃষ্টিতে দেখতে গেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী, স্পিকার একজন নারী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চতর পদে অনেক নারী অবস্থান করছেন। দেশে নারীর উন্নয়নের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। মোটা দাগে দেখলে আমাদের দেশের নারীরা অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু যখনই আমরা গভীরে গিয়ে দেখি তখন চিত্র একেবারেই আলাদা মনে হয়। এখনো বাল্যবিবাহ চালু আছে, নারী নির্যাতন বন্ধ হয়নি, সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায়নি, কর্মক্ষেত্রে নারীরা নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের হেনস্তার শিকার হচ্ছে, একই কাজ করেও নারীরা পুরুষের সমান পারিশ্রমিক পাচ্ছে না। এমনকি নারীরা নিজেদের স্বপ্নটাও নিজের মতো দেখতে পারে না। সেটা সমাজ, ধর্ম, রাষ্ট্র দিয়ে নির্ধারিত হয়। তাদের জীবনের স্বাধীনতা কিংবা অধিকার আক্ষরিক অর্থে আমরা এখনো নিশ্চিত করতে পারিনি। নারীর এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সামগ্রিক সমাজব্যবস্থা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
নারীর পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা তখনই নিশ্চিত হবে যখন আমরা সবাই নারী কিংবা পুরুষ প্রত্যেককে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে শিখব। যখনই নারীকে সমাজের তথাকথিত নারী হিসেবে দেখা হয়, তখনই নারীকে নানা ধরনের কম্প্রোমাইজের ভেতর দিয়ে যেতে হবে বলে শেখানো হয় বা বলা হয়। কিন্তু সে যদি মানুষ হিসেবে তার অধিকারগুলো পেয়ে বড় হয় তবেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এমন না যে সবাইকে সব করে ফেলতে হবে। একজন নারী যাতে নিজের সব সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারে সেই স্বাধীনতাটা যাতে তার থাকে। এটা ভীষণ জরুরি।
আমার প্রথম পরিচয় আমি একজন মানুষ। আমি এভাবেই ভাবতে চাই। অবশ্যই সৃষ্টিকর্তা আমাকে নারী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন, এজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ নারীরা কি অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায় সেটা আমি একটু হলেও অনুধাবন করতে শিখেছি। আমি মনে করি নারীরা ধরিত্রীর আরেকটা রূপ। প্রকৃতি যেমন আমাদের রক্ষা করে, সবকিছু তার মধ্যে ধারণ করে তেমনি একজন নারীও সেই ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। সে তার ভেতরে আরেকটি মানুষকে ধারণ করতে পারে। এটা আসলে অপার শক্তি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই শক্তির অনুভূতি বেশির ভাগ নারীই বুঝতে পারে না প্রচলিত সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় অনুশাসনের জন্য। এমনকি একজন নারী মা হতে চায় কি না, চাইলেও কখন সে সন্তান নিতে চায় সেই স্বাধীনতাও তার নেই। তাকে নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে বিয়ে করতে হবে, সন্তানের মা হতে হবে, বাচ্চা না হওয়া মানে জীবন অর্থহীন এ বিষয়গুলো তার মধ্যে শিশুকাল থেকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আমি এ বিষয়গুলোর সঙ্গে একমত নই। কারণ প্রতিটি নারীর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে। আর সে যে নিজের মধ্যে আরেকটি মানুষ ধারণ করার ক্ষমতা নিয়েই জন্মায়, এটি অনেক বড় পাওয়ার। অথচ নারী হয়ে জন্মানোর কারণে পরিবার, সমাজব্যবস্থা, স্কুল-কলেজ, কর্মক্ষেত্র সেটা হোক শোবিজ কিংবা বাইরে সব জায়গায় নারীরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়।
এখনো আমাদের সমাজে একই পরিবারেও ভাই-বোন একই সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বড় হয় না। অনেককে ছোটবেলায় বিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অথবা একটা নির্দিষ্ট সময় পর তাকে বলা হয়, তুমি নারী, তোমার এর চেয়ে বেশি কিছু করার দরকার নেই বা তোমার দ্বারা এর চেয়ে আর বেশি কিছু সম্ভব না। মোটকথা, নারীর পথ কোনো দিক থেকেই মসৃণ না। এখানেই আমার সমস্যা। কেন আমার ভাই যে সুবিধা পায় আমি তা পাব না? কেন একটা পুরুষ যেভাবে স্বাধীনভাবে নিজের স্বপ্নগুলো সাজাতে পারে, আমি তা পারব না? কেন নারীর পথ মসৃণ হবে না? কেন নারীরা স্বাধীনভাবে নিজের অধিকারগুলো বুঝে পাবে না? সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে কিন্তু বাস্তবে তো এই বৈষম্যগুলো সব সময় থেকেই যাচ্ছে।
অভিনেত্রী হিসেবে আমি নিজেকে সমাজের আলাদা কিছু ভাবছি না। যেহেতু শোবিজের মানুষের গল্পগুলো সহজে মানুষের কাছে পৌঁছায়, মানুষ রসালো গল্প শুনতে ভালোবাসে তাই আমাদের স্ট্রাগল নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। কিন্তু আসল চিত্র হলো সব জায়গায় নারীদের টানাপড়েনের গল্প একই। আমি হয়তো একটা কমফোর্টেবল জোনে আছি। জীবনে কিছু অর্জন করেছি। তার পরও এত এত বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তাই একজন প্রান্তিক মেয়েকে যেখানে তার বাবা-মা ঘাড়ের বোঝা মনে করছে, সমাজ তাকে বোঝা মনে করছে, সেখানে তার জীবনে কী ঘটে থাকে সেটা সহজেই অনুমান করা যায়। অথচ আমাদের সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। তাদের এভাবে অবহেলিত করে পিছিয়ে রাখলে সমগ্র জাতির জন্যই বিরাট ক্ষতি। এই নারীদেরই যদি মসৃণ একটা পথ করে দেওয়া যায়, তাদের অধিকারগুলো পুরুষের সমান করে নিশ্চিত করা যায় তাহলে একটি জাতি অনেক দ্রুত উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে।
লেখক : অভিনেত্রী
শেয়ার করুন
আজমেরী হক বাঁধন | ২৬ মার্চ, ২০২২ ০০:০০

ব্যক্তিজীবনের কথা বললে স্বাধীনতার অর্থ আমি খুব যে আলাদা করে জানি এ রকম না। কারণ আমার তো জীবনের ৩৪ বছর কেটে গেছে পরাধীনতার শৃঙ্খলে। আমার মনে হয়, মানুষ হিসেবে আমার যে অধিকারগুলো আছে সেটাই তো প্রকৃত স্বাধীনতা। সর্বশেষ চার বছর ধরে আমি চেষ্টা করছি আমার স্বাধীনতা, আমার অধিকার বুঝে পেতে। সেখানে আসলে নানা বাধা আছে। দিনশেষে আমরা মানুষ হিসেবে তো পূর্ণ স্বাধীনতা পাচ্ছি না। আর দেশের স্বাধীনতার কথা বললে সেটিও কিন্তু ওই অধিকার আদায়ের জন্য। আমাদের দেশের যেসব সূর্যসন্তান দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন তারা তো অধিকার আদায়ের জন্যই হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। আমাদের যুগের পর যুগ প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছিল বলেই একটা সময় আমরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। এটা আমাকে ভীষণভাবে আন্দোলিত করে। অবশ্যই আমি বাংলাদেশি হিসেবে গর্বিত। যারা দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষের ভালোর কথা চিন্তা করে তাদের সর্বস্ব দিয়ে যুদ্ধ করেছেন, শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা। তারা দেশ স্বাধীন করেছেন বলেই আজ আমরা যার যার জায়গায় অবস্থান করছি। যদি তা না হতো হয়তো সবার জীবনরেখাই ভিন্ন হতো।
আপাতদৃষ্টিতে দেখতে গেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী, স্পিকার একজন নারী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চতর পদে অনেক নারী অবস্থান করছেন। দেশে নারীর উন্নয়নের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। মোটা দাগে দেখলে আমাদের দেশের নারীরা অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু যখনই আমরা গভীরে গিয়ে দেখি তখন চিত্র একেবারেই আলাদা মনে হয়। এখনো বাল্যবিবাহ চালু আছে, নারী নির্যাতন বন্ধ হয়নি, সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায়নি, কর্মক্ষেত্রে নারীরা নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের হেনস্তার শিকার হচ্ছে, একই কাজ করেও নারীরা পুরুষের সমান পারিশ্রমিক পাচ্ছে না। এমনকি নারীরা নিজেদের স্বপ্নটাও নিজের মতো দেখতে পারে না। সেটা সমাজ, ধর্ম, রাষ্ট্র দিয়ে নির্ধারিত হয়। তাদের জীবনের স্বাধীনতা কিংবা অধিকার আক্ষরিক অর্থে আমরা এখনো নিশ্চিত করতে পারিনি। নারীর এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সামগ্রিক সমাজব্যবস্থা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
নারীর পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা তখনই নিশ্চিত হবে যখন আমরা সবাই নারী কিংবা পুরুষ প্রত্যেককে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে শিখব। যখনই নারীকে সমাজের তথাকথিত নারী হিসেবে দেখা হয়, তখনই নারীকে নানা ধরনের কম্প্রোমাইজের ভেতর দিয়ে যেতে হবে বলে শেখানো হয় বা বলা হয়। কিন্তু সে যদি মানুষ হিসেবে তার অধিকারগুলো পেয়ে বড় হয় তবেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এমন না যে সবাইকে সব করে ফেলতে হবে। একজন নারী যাতে নিজের সব সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারে সেই স্বাধীনতাটা যাতে তার থাকে। এটা ভীষণ জরুরি।
আমার প্রথম পরিচয় আমি একজন মানুষ। আমি এভাবেই ভাবতে চাই। অবশ্যই সৃষ্টিকর্তা আমাকে নারী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন, এজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ নারীরা কি অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায় সেটা আমি একটু হলেও অনুধাবন করতে শিখেছি। আমি মনে করি নারীরা ধরিত্রীর আরেকটা রূপ। প্রকৃতি যেমন আমাদের রক্ষা করে, সবকিছু তার মধ্যে ধারণ করে তেমনি একজন নারীও সেই ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। সে তার ভেতরে আরেকটি মানুষকে ধারণ করতে পারে। এটা আসলে অপার শক্তি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই শক্তির অনুভূতি বেশির ভাগ নারীই বুঝতে পারে না প্রচলিত সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় অনুশাসনের জন্য। এমনকি একজন নারী মা হতে চায় কি না, চাইলেও কখন সে সন্তান নিতে চায় সেই স্বাধীনতাও তার নেই। তাকে নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে বিয়ে করতে হবে, সন্তানের মা হতে হবে, বাচ্চা না হওয়া মানে জীবন অর্থহীন এ বিষয়গুলো তার মধ্যে শিশুকাল থেকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আমি এ বিষয়গুলোর সঙ্গে একমত নই। কারণ প্রতিটি নারীর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে। আর সে যে নিজের মধ্যে আরেকটি মানুষ ধারণ করার ক্ষমতা নিয়েই জন্মায়, এটি অনেক বড় পাওয়ার। অথচ নারী হয়ে জন্মানোর কারণে পরিবার, সমাজব্যবস্থা, স্কুল-কলেজ, কর্মক্ষেত্র সেটা হোক শোবিজ কিংবা বাইরে সব জায়গায় নারীরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়।
এখনো আমাদের সমাজে একই পরিবারেও ভাই-বোন একই সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বড় হয় না। অনেককে ছোটবেলায় বিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অথবা একটা নির্দিষ্ট সময় পর তাকে বলা হয়, তুমি নারী, তোমার এর চেয়ে বেশি কিছু করার দরকার নেই বা তোমার দ্বারা এর চেয়ে আর বেশি কিছু সম্ভব না। মোটকথা, নারীর পথ কোনো দিক থেকেই মসৃণ না। এখানেই আমার সমস্যা। কেন আমার ভাই যে সুবিধা পায় আমি তা পাব না? কেন একটা পুরুষ যেভাবে স্বাধীনভাবে নিজের স্বপ্নগুলো সাজাতে পারে, আমি তা পারব না? কেন নারীর পথ মসৃণ হবে না? কেন নারীরা স্বাধীনভাবে নিজের অধিকারগুলো বুঝে পাবে না? সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে কিন্তু বাস্তবে তো এই বৈষম্যগুলো সব সময় থেকেই যাচ্ছে।
অভিনেত্রী হিসেবে আমি নিজেকে সমাজের আলাদা কিছু ভাবছি না। যেহেতু শোবিজের মানুষের গল্পগুলো সহজে মানুষের কাছে পৌঁছায়, মানুষ রসালো গল্প শুনতে ভালোবাসে তাই আমাদের স্ট্রাগল নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। কিন্তু আসল চিত্র হলো সব জায়গায় নারীদের টানাপড়েনের গল্প একই। আমি হয়তো একটা কমফোর্টেবল জোনে আছি। জীবনে কিছু অর্জন করেছি। তার পরও এত এত বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তাই একজন প্রান্তিক মেয়েকে যেখানে তার বাবা-মা ঘাড়ের বোঝা মনে করছে, সমাজ তাকে বোঝা মনে করছে, সেখানে তার জীবনে কী ঘটে থাকে সেটা সহজেই অনুমান করা যায়। অথচ আমাদের সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। তাদের এভাবে অবহেলিত করে পিছিয়ে রাখলে সমগ্র জাতির জন্যই বিরাট ক্ষতি। এই নারীদেরই যদি মসৃণ একটা পথ করে দেওয়া যায়, তাদের অধিকারগুলো পুরুষের সমান করে নিশ্চিত করা যায় তাহলে একটি জাতি অনেক দ্রুত উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে।
লেখক : অভিনেত্রী