পুরনো কিছু বাঁশ আর টিনের তৈরি ছাপড়া ঘরে বসবাস করতেন সত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধা ফতেমা বেগম। রবিবার বিকেলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দিলে সন্ধ্যা রাতেই পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। দুর্যোগকালীন সময় পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে পরদিন সকালে নিজের বাড়ি এসে দেখেন তার ঘরখানা আর দাঁড়িয়ে নেই, মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ভিটিতে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল রাতেই তার থাকার শেষ আশ্রয়টুকু গুড়িয়ে দিয়ে গেল। আর ক্ষত চিহ্ন রেখে গেল।
ফতেমা বেগম পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্ধা। সে ওই এলাকার মৃত হোসেন দফাদারের স্ত্রী।
সরেজমিনে গিয়ে সোমবার সকালে দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে বৃদ্ধার ঘরটি দুমড়ে-মুচড়ে মাটিতে মুখ থুবড়ে ফেলে রেখে গেছে। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় দুর্গত বৃদ্ধা তার ঘর মেরামতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফতেমা বলছেন, ‘বাবারে গরিব মানুষ ঘর তোলার অর্থ নেই। টিনের ছাপড়া দিয়ে কোনো রহম দিন পার করছিলাম। তাও ঝড়ে ভেঙে দিল। কেমনে ঘর তুলমু আর কয় দিন বা মানুষের বাড়ি থাকমু’। স্থানীয়রা বলছেন, বৃদ্ধার এক ছেলে ও বউ দরিদ্রতার কারণে ঢাকায় গিয়ে কাজ করেন। সে একটি ছোট নাতনি নিয়ে এই ঘরে থাকতেন। ঝড় এসে তার ঘরটা ভেঙে দিল ফলে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা এমন অবস্থা। এ বিষয়ে ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মু. কামরুজ্জামান শিবলী বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টারে শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা প্রস্তুত চলছে। আমরা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃদ্ধার জন্য শুকনো খাবার এবং পুনর্বাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।