এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দামামা বেজেছে প্রায় এক সপ্তাহ আগে। অথচ মাঠের লড়াইয়ে এখনো মুখোমুখি হতে দেখা যায়নি পরাশক্তি দুই দলকে। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আসরের প্রথম বড় ম্যাচে আজ মাঠে নামছে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। দুই বিশ্বকাপজয়ীর এই দ্বৈরথের মঞ্চ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বার্বাডোজ। গ্রুপ ‘বি’র ম্যাচটি হবে ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে।
অ্যাশেজের উত্তাপ ছোট্ট সংস্করণের বিশ্বকাপটিতে ফেরানোর আগে দুই দলই খেলে ফেলেছে একটি করে ম্যাচ। তাতে অবশ্য এগিয়ে আছে অজিরা। ওমানের বিপক্ষে ৩৯ রানের জয়ে আসর শুরু করেছে মিচেল মার্শের অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের শুরুটা হয়েছে স্রোতের প্রতিকূলে। বৃষ্টি বাধায় স্কটল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগের আগে বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল থ্রি লায়নসের। ১০ ওভারে ১০৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ইংল্যান্ডের জেতার সম্ভাবনা কাগজে-কলমে থাকলেও খেলা মাঠে গড়ালে বাস্তবতা হতে পারত ভিন্ন।
ওই অতীত ভুলে এবার সামনের বিগ ম্যাচের দিকে তাকানোর পালা জস বাটলারদের। ইংল্যান্ডের জার্সিতে ৪১০টি আন্তর্জাতিক উইকেটের অধিকারী তারকা স্পিনার গ্রায়েম সোয়ান খুব আশাবাদী তার উত্তরসূরিদের নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এ ম্যাচটিকে তিনি আখ্যা দিয়েছেন ইংল্যান্ডের জন্য ‘অবশ্যই জিততে হবে’ হিসেবে। স্কাই স্পোর্টসের দেওয়া সাক্ষাৎকারে সোয়ান বলেন, ‘আমরা এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সম্ভাবনা নিয়ে এত কথা বলছি। কারণ এবারও বিশ্বকাপ জেতার খুবই খুবই সুযোগ রয়েছে আমাদের। আমার মনে হয়, কাগজে-কলমে আর সবার মতো প্রচণ্ড শক্তিশালী দল আমরা। আর এই দলটার উচিত অস্ট্রেলিয়াকে হারানো। ২০১০ সালে বার্বাডোজে হারানো অস্ট্রেলিয়ার দল আর এবারের দল প্রায় একই। আমাদের এই ম্যাচটা জিততে হবে, বিশ্বকাপ ট্রফিটা ঘরে নিতে হবে এবং এরপর ইউরো জিততে হবে। তাহলেই বাড়ির সবাই খুশি হবে।’
শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কীভাবে জিততে হবে, সেই উপায়ও সোয়ান বলে দিয়েছেন, ‘আমাদের খুবই আগ্রাসী মনোভাব এই ম্যাচে মাঠে নামতে হবে। আমরা যদি অস্ট্রেলিয়ার ওপর কঠোরভাবে প্রভাব ফেলতে পারি, তাহলেই জয় আসা সম্ভব।’ এই ম্যাচে জোফরা আর্চার ইংল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হতে পারেন বলে মনে করেন সোয়ান, ‘জোফরাকে শুরুর দিকে উইকেট নেওয়া শুরু করতে হবে। ওর যে গতি আর আগ্রাসন তা গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে মার্ক উড আছেন, সেরা স্পিন অ্যাটাক আছে। সব মিলিয়ে আমাদের আরও ধারালো হয়ে উঠতে হবে।’
আইপিএলে নিজের ছায়া হয়ে থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আলো ছড়ানো শুরু করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মার্কাস স্টয়নিস। এ দুজন কেমন বিধ্বংসী হতে পারেন তার ঝলক দেখিয়েছেন ওমানের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে প্যাট কামিন্সের বদলে একাদশে সুযোগ পেয়ে গতির ঝড় তোলেন ন্যাথান অ্যালিস। ইংল্যান্ডর মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাকে একাদশে দেখা যেতে পারে আবার। তবে অজি তাঁবুতে দুশ্চিন্তার নাম গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ব্যর্থ আইপিএল কাটানোর রেশ দেখা গেছে শেষ ম্যাচেও। তবে ২০২১ আসরের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ম্যাক্সওয়েল স্বরূপে ফিরে আসবেন তেমনটাই প্রত্যাশা অধিনায়ক মিচেল মার্শের। সব মিলিয়ে এ ম্যাচের মাধ্যমে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার উত্তাপ দেখতে প্রস্তুত ক্রিকেট বিশ্ব।