রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

অর্থনীতিতে চাপ আরও বাড়তে পারে

আপডেট : ১১ জুন ২০২৪, ০১:৫৯ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে। এ চাপ আরও বাড়তে পারে। এ সময় বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আরেকটু বাস্তবমুখী হওয়া দরকার ছিল। অর্থনীতিকে একটু ঠান্ডা হতে দেওয়া দরকার। এটা হিটেড অর্থনীতি। যেভাবে মূল্যস্ফীতি চলছে, তার জন্য প্রবৃদ্ধি যদি কমেও আসে সেজন্য শঙ্কার কারণ নেই।

গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে অর্থনীতি বিভাগ আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা ২০২৪-২৫’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী নাহার, ড. রুমানা হক ও ড. সৈয়দ নঈমুল ওয়াদুদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল। সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মাসুদা ইয়াসমিন।

অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, বাজেটে ট্যাক্স আদায়ে বেশ জোর দেওয়া হয়েছে। এটা বেশি হয়েছে পরোক্ষ করের দিকে, প্রত্যক্ষ কর কম। ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে কালো টাকা সাদা করা সেটা ন্যায্যতাভিত্তিক সমাজের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। সৎ মানুষরা ট্যাক্স দিচ্ছেন বেশি করে, যারা কালো টাকা কম রেটে সাদা করবেন। এটা দুর্নীতি, কালো টাকাকে উৎসাহিত করবে। ডিফল্ট লোনের ব্যাপারে নজর দেওয়া দরকার, ব্যাংকিং কমিশন করা দরকার। শিক্ষা ও জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, জিডিপির দুই শতাংশের কম শিক্ষায় বরাদ্দ, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর গড় শিক্ষাবাজেট থেকেও কম। আবার বরাদ্দের বার্ষিক বাস্তবায়নের হার নেতিবাচক, খুবই কম। একদিকে বরাদ্দ কম, অন্যদিকে বরাদ্দের টাকাও সঠিকভাবে ব্যয় করা হয় না। এটা কেন নেতিবাচক, এটি অন্তত বছরে দুটি পরিবীক্ষণ দরকার।

স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলেন অধ্যাপক রুমানা হক। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির দশমিক ৭ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী জিডিপির ৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা উচিত। তবে এ বরাদ্দও স্বাস্থ্য খাত পুরোপুরি খরচ করতে পারে না। বয়স্ক লোকের সংখ্যা বাড়ছে, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স, পরিবেশগত ঝুঁকি, ডায়াবেটিস বাড়ছে। সঠিক সময়ে বরাদ্দ, সেবার মান, মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

শেষে উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বাজেটে বরাদ্দের পুরো টাকা ঠিকভাবে খরচ করার মতো সক্ষমতা আমাদের সবগুলো মন্ত্রণালয়ের আছে কি না এটা বড় প্রশ্ন? দক্ষতার অভাবে বিভিন্ন খাতে অপচয়ের পরিমাণ বাড়ছে। যদি এই অপচয়ের পরিমাণ কমিয়ে আনা যায় তাহলে বাজেট থেকে আরও বেশি সুফল পাওয়া যাবে। সেজন্য দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের ৫৮ শতাংশ তরুণ প্রজন্ম, যাদের বয়স ত্রিশের কম; এই তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা খাত ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে আরও বেশি বরাদ্দ দেওয়ার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত