সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

এবার কি পারবেন সাউথগেট

আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৪, ০৬:০০ এএম

আট বছর ধরে বারবার সমালোচনায় জর্জরিত হতে হয়েছে। শক্তিশালী ব্রিটিশ মিডিয়া পান থেকে চুন খসলেই শূলে চড়িয়েছে তাকে। তবে এফএ আস্থা হারায়নি। তারই প্রতিদান দিয়ে চলছেন গ্যারেথ সাউথগেট এবং সেটা ধারাবাহিকভাবেই। ৫৩ বছরের সাউথগেটের অধীনে ইংল্যান্ড টানা দ্বিতীয়বারের মতো পৌঁছে গেছে ইউরোর ফাইনালে। ডর্টমুন্ডে বুধবার রাতে ম্যাচের ৮০ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন করেন সাউথগেট। তাতেই বাজিমাত। সুপার সাব ওলি ওয়াটকিনস যোগ করা সময়ে অসাধারণ গোল করে ডাচদের হৃদয় ভেঙে ইংল্যান্ডকে নিয়ে যান বার্লিনের ফাইনালে। 

ভীষণ গর্বের একটা রেকর্ডে নাম উঠে গেছে সাউথগেটের। ইউরোর টানা দুই আসরে দলকে ফাইনালে তোলা কোচদের ছোট্ট তালিকায় ঠাঁই পান তিনি। যে তালিকায় আগে থেকেই ছিলেন হেলমাট সোন ও বার্টি ফোগস। এই দুই জার্মান কোচের শিরোপা ভাগ্যটা নিজের করে নেওয়ার পালা সাউথগেটের। সেই রেকর্ড ছুঁতে তার দলকে হারাতে হবে উত্তুঙ্গ আত্মবিশ্বাসে ফুটতে থাকা স্পেনকে।

হেলমাট ও বার্টির দারুণ একটা মিল রয়েছে। দুজনই একবার করে ফাইনালের ও শিরোপার হিসাব মেলাতে পেরেছেন, একবার পারেননি। হেলমাট ১৯৭২ সালে পশ্চিম জার্মানিকে শিরোপা জেতালেও পরের আসরে পারেননি। বার্টির ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টোটা। ১৯৯২ সালে তার জার্মানি ফাইনালে হারে ডেনমার্কের কাছে। সেই দুঃখ বার্টি ও তার দল পরের আসরে ভুলেছেন শিরোপায় চুমু দিয়ে। সাউথগেটের সামনে সুযোগ বার্টির সেই রেকর্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর। ২০২১ ইউরোতে ফেভারিটের মতোই ফাইনালে পৌঁছেছিল ইংল্যান্ড। তবে রবার্তো মানচিনির ইতালির কাছে টাইব্রেকারের ভাগ্য পরীক্ষায় হারতে হয় থ্রি লায়ন্সদের। ১৪ জুলাই বার্লিনের রাতটা নিশ্চয়ই ওয়েম্বলির বিষাদময় রাতে পরিণত হতে দিতে চাইবেন না সাউথগেট।

সেমিফাইনালে যে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তাতে সাউথগেটে আস্থাটা বেড়ে গেছে ব্রিটিশদের। সমালোচনা দূরে থাক, অনেক সংবাদমাধ্যম তো এই আসর শেষে সাউথগেটের নামের আগে রাজার দেওয়া ‘স্যার’ উপাধিও দেখতে শুরু করে দিয়েছে। স্যার লুইস হ্যামিলটন, স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের, স্যার অ্যান্ডি মারি  ও স্যার ক্রিস হো’র পরের নামটাই সাউথগেটের হবে এমন ভবিষ্যদ্বাণী করে ফেলেছেন অনেকে।

ব্যক্তিগত এই স্বীকৃতি মেলা না মেলা নিয়ে এখন অবশ্য ভাবার সুযোগ নেই সাউথগেটের। বরং ডাচ বাধা ডিঙিয়ে ফাইনালে পৌঁছানোর পর এখন তাকে ভাবতে হচ্ছে স্প্যানিশদের নিয়ে। স্পেনকে হারানোর ছক কষতে হবে তাকে। এর আগে অবশ্য সব ভুলে বুধবার রাতে পাগুলে উদযাপনে মেতে উঠেছিলেন সাউথগেট।  যেন অনেক বড় বোঝা নেমে গেছে বুক থেকে। এরপর সংবাদ সম্মেলনে আবেগি এক সাউথগেটের দেখা মিলেছে, ‘আমরা সবাই সবাইকে ভালোবাসতে চাই, তাই না?  যখন আপনি আপনার দেশের জন্য বিশেষ কিছু করবেন এবং যখন আপনি একজন গর্বিত ইংলিশম্যান, যখন আপনাকে অনেক অনেক সমালোচনা সইতে হয় প্রতিটি মুহূর্ত, তখন টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোর ফাইনালে উঠে আসা অবশ্যই বিশেষ কিছু।’ এরপর যোগ করেন, ‘আমরা দেশের মানুষকে ভীষণ আনন্দময় কিছু রাত উপহার দিয়েছি। বলতে পারেন ৫০ বছরের মধ্যে অল্প কিছু রাত।’

যে শিরোপাটা তাদের ছোঁয়া হয়নি কখনই। সাউথগেটের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড স্পেন বাধা পেরিয়ে সেটা ছুঁতে পারবে কি না তা সময়ই বলে দেবে। ছোঁয়া হয়ে গেলে সাউথগেটের নামটা উঠে যাবে ইতিহাসের পাতায়। ইংলিশরা প্রথমবারের মতো বসবে ইউরোপের মসনদে। আর তাতে হয়তো সাউথগেটের মিলে যাবে মর্যাদার ‘স্যার’ উপাধিও।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত