যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস নিজেকে হঠাৎ কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন উল্লেখ করে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দাবি, কমলা আগে তার কৃষ্ণাঙ্গ পরিচয় সামনে আনতেন না। কমলা হ্যারিস সবসময় ছিলেন ভারতীয়। তিনি শুধু ভারতীয় ঐতিহ্যকে মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। কয়েক বছর আগে তিনি নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করার আগ পর্যন্ত আমি জানতাম না যে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ। এখন তিনি কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে গেলেন এবং এই পরিচয়ে পরিচিত হতে চান।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় বার্ষিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প এ কথা বলেন। ট্রাম্প যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন সম্মেলনে উপস্থিত এক হাজার দর্শকের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিমা করছিল।
এ সময় ট্রাম্প বলেন, আমি আসলে জানি না, তিনি (কমলা হ্যারিস) কী ভারতীয়, নাকি কৃষ্ণাঙ্গ? তবে আপনারা জানেন, আমি দুই পরিচয়কেই শ্রদ্ধা করি। কিন্তু নিশ্চিতভাবে তিনি সেটি করেন না। কারণ, তিনি শুরু থেকেই ভারতীয় ছিলেন। হঠাৎ করেই তিনি সুর পাল্টে একজন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষে পরিণত হলেন।
যদিও ট্রাম্পের কথাটি সত্য নয়। পারিবারিক পরিচয়ের জায়গা থেকে কমলা হ্যারিস ভারতীয় ও জ্যামাইকান ঐতিহ্য বহন করেন। লম্বা সময় ধরেই তিনি নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয় বলে পরিচয় দিয়ে আসছেন। কমলা হ্যারিসই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয় আমেরিকান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন। কমলা হ্যারিসকে নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, তিনি (ট্রাম্প) যা বলেছেন, তা অত্যন্ত জঘন্য। এটা অপমানজনক।
গত মাসের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা শুরু করার পর অনলাইনে লৈঙ্গিক ও বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হচ্ছেন কমলা হ্যারিস। কিছুসংখ্যক উগ্র ডানপন্থি ব্যবহারকারী অনলাইনে তার বর্ণবাদী পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। ট্রাম্প নিজেও ব্যক্তিগতভাবে কমলাকে আক্রমণ করছেন।
অবশ্য রিপাবলিকান কৌশলবিদ হুইট এরিস বলেন, হ্যারিসের বর্ণভিত্তিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচক্ষণতার পরিচয় দেননি ট্রাম্প। হ্যারিসের পরিচয়ে নিয়ে কথা না বলে তার বিভিন্ন নীতি নিয়ে কথা বলতে পারতেন তিনি।