পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবার মান ক্রমান্বয়ে নিচের দিকে যাচ্ছে। নয়টি পদের বিপরীতে ডাক্তার আছেন মাত্র চারজন। তাদের মধ্যে একজনকে প্রশাসনিক কাজেই ব্যস্ত থাকতে হয় বেশিরভাগ সময়।
তাই দেড় লক্ষাধিক জনগণের জন্য হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা দেন মূলত তিনজন ডাক্তার। এর সঙ্গে চিকিৎসা সরঞ্জামাদির অভাব, ওষুধ সংকট, ওষুধ কোম্পানির এমআরদের দৌরাত্ম্য এবং অভ্যন্তরীণ দলাদলির কারণে স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার জনসাধারণ।
জানা গেছে, ৩১ শয্যার হাসপাতালে ১২টি পদ থাকলেও ডাক্তার আছেন মাত্র চারজন। অর্থোপেডিক্স, গাইনি, অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞের পদগুলো শূন্য। তিনজন মেডিকেল অফিসারের পোস্টিং থাকলেও জুনিয়র কনসালট্যান্টের চারটি পদে কোনো কর্মকর্তা নেই। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচএ) ডা. মীর শহিদুল হাসান শাহীন বেশীরভাগ সময়ই ব্যস্ত থাকেন প্রশাসনিক কাজে। বাকি তিনজন মেডিকেল অফিসারের মধ্যে ডা. এনামুল হক (আরএমও), ডা. শায়লা আক্তার, ডা. মাহবুব আলম, ডেন্টাল সার্জন ফারজানা রহমান রাখি রোস্টার করে দায়িত্ব পালন করছেন।
ইমার্জেন্সি বিভাগের দায়িত্ব পালন করছেন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সিরাজুল ইসলাম ও মেরিনা আক্তার। প্রকৃতার্থে মাত্র তিনজন চিকিৎসক দ্বারাই চলছে হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম। ভালো চিকিৎসক পোস্টিং হলেও এখানে আসার পরপরই তদবির করে তাদের সুবিধামতো এলাকায় চলে যান।
প্রকল্প থেকে সম্প্রতি রেভিনিউএ রূপান্তরিত হাসপাতাল হওয়ায় এখানে চিকিৎসা সরঞ্জামাদির অভাব ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সংকট রয়েছে মারাত্মক। বাজেট ঘাটতির কারণে সরবরাহ না থাকার অজুহাত শুনতে শুনতে এলাকাবাসী বিরক্ত। হাসপাতালের এক্স-রে ও ইসিজি মেশিন ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে বিকল রয়েছে। যে কারণে রোগীদের প্যাথলজিক্যাল টেস্টের জন্য বাইরের ক্লিনিকের ওপর নির্ভর করতে হয়। যা রোগীদের জন্য অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর শহিদুল হাসান শাহীন বলেন, ‘বেশিরভাগ সময়ই তাকে প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। বর্তমানে ১২ জনের স্থলে মাত্র তিনজন ডাক্তার রয়েছে। হাসপাতালের এক্স-রে ও ইসিজি মেশিন দীর্ঘদিন যাবৎ নষ্ট রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালটি সম্প্রতি রাজস্ব ভুক্ত হলেও পুরোপুরি রেভিনিউ খাতের বরাদ্দ প্রাপ্তিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার আওতায় আসেনি। আশা করছি চলতি বছরের মধ্যেই জটিলতা কেটে যাবে এবং চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়ন হবে।’