হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতিটি কাজই আমাদের জন্য অনুসরণীয়, অনুকরণীয়। তিনি কীভাবে খেয়েছেন, কীভাবে চলেছেন। কোন কোন কাজগুলো ত্যাগ করেছেন। কোন কাজগুলো বেশি করেছেন, সেগুলো অনুসরণ করা। এমন কিছু আমল আছে, যেগুলো রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো ছাড়তেন না। সেগুলোর মধ্য থেকে চারটি আমল উল্লেখ করা হলো।
আশুরার রোজা : মহররম মাসের দশম দিনকে আশুরার দিন বলা হয়। এ দিনের রোজা রাখার বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) আশুরা ও রমজানের রোজা সম্পর্কে যেরূপ গুরুত্বারোপ করতেন, অন্য কোনো রোজা সম্পর্কে রাসুল (সা.)-কে সেরূপ গুরুত্ব প্রদান করতে দেখিনি। (সহিহ বুখারি)
রমজানের শেষ দশকের ইতেকাফ : ইতেকাফ অর্থ অবস্থান করা। ইসলামের পরিভাষায় ইতেকাফ হলো, মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জামে মসজিদে অবস্থান করা। মদিনায় অবস্থানকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি বছর ইতেকাফ পালন করতেন। ব্যস্ততা সত্ত্বেও রমজানে তিনি ইতেকাফ ছাড়েননি। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকে শবে কদর অনুসন্ধান করো। (সহিহ বুখারি) আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতেকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতেকাফে কাটান। (সহিহ বুখারি)
আইয়ামে বিজের রোজা : আবু জর গিফারি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, হে আবু জর, যদি তুমি প্রতি মাসে তিন দিন রোজা পালন করতে চাও, তাহলে (প্রতি চাঁদের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে তা পালন করো। (তিরমিজি) রাসুল (সা.) প্রতি চাঁদের এই তিন দিন নিয়মিত রোজা রাখতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বাড়িতে থাকা অবস্থায় বা সফরে থাকা অবস্থায় কখনোই আইয়ামে বিজের রোজা ছাড়তেন না। (নাসায়ি)
ফজরের আগের দুই রাকাত সুন্নত : উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) জোহরের পূর্বে চার রাকাত এবং (ফজরের পূর্বে) দুই রাকাত নামাজ ছাড়তেন না। (সহিহ বুখারি) অন্য হাদিসে এসেছে, ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। (সহিহ মুসলিম)