টাকা চুরির অভিযোগে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে এক শিশুকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার সকালে উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির নাম রানা মিয়া (৯)। সে ওই গ্রামের আনছার আলীর ছেলে। ঘটনাটি গত বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
খুঁটিতে বেঁধে রাখার ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটির দুই হাত পেছনে খুঁটির সঙ্গে বাঁধা। পিঠ ও বাঁধা দুই হাতের মাঝখানে খুঁটি। কিছু নারী-পুরুষ তাকে ঘিরে আছে। বিভিন্নজন তাকে নানা প্রশ্ন করছে। এ সময় শিশুটিকে বলতে শোনা যায়, হাত খুলে দেন ঝিনঝি (ব্যথা) লাগছে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার দশলিয়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি থেকে মোবাইল ও কিছু টাকা হারিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রানাকে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে তার বাড়ি থেকে ধরে আনা হয়। পরে তাকে ঘণ্টাব্যাপী স্থানীয় বাজারে খুঁটির সঙ্গে দুই হাত বেঁধে মারধর করে ওই ব্যবসায়ীসহ কয়েকজন। একপর্যায়ে শিশুটির হাতে সুচ ঢোকানোর চেষ্টাও করা হয়। পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে ছাড়িয়ে নেন।
এদিকে মঙ্গলবার রাতেই শিশুটিকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সুরঞ্জন কুমার বলেন, ‘শিশুটি বাম হাত ও বাম পায়ে আঘাত পেয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
শিশুটির মা রেখা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘টাকা চুরির অভিযোগে ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে জোর করে ধরে নিয়ে যান। তারপর আমার ছেলেকে বিনা অপরাধে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন। আমি এই নির্যাতনের বিচার চাই। কিন্তু আমাকে মীমাংসার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।’
এ বিষয়ে গত বুধবার রাতে সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘শিশুটিকে খুঁটিতে বেঁধে রাখার কথা শুনেছি। আমি সশরীরে হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছি। শিশুটির অভিভাবককে মামলা দেওয়ার কথা বলেছি।’ এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে প্রথমে তিনি ফোন ধরেননি। পরে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।