পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার উত্তর চরমোন্তাজ এলাকায় ধসে পড়ছে একটি সেতুর সংযোগ সড়ক। সেতু বরাবর গাইডওয়ালের গোড়ায় দেখা দিয়েছে ফাটল। ফলে পুরো সেতুটি ঝুঁকিতে রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সেতুটি সংস্কার করে ঝুঁকিমুক্ত করা হোক।
উপজেলার উত্তর চরমোন্তাজ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এমএ মতিনের বাড়িসংলগ্ন খালের ওপর ৬৬ মিটার সেতু ও ৩৫০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু নির্মাণের এক বছরের মাথায় ভারী বর্ষণের কারণে সেতুটির সংযোগ সড়ক ধসে পড়ে। সেতু বরাবর গাইডওয়ালের গোড়ায় দেখা দিয়েছে বড় ধরনের ফাটল। যেকোনো সময় পুরো গাইডওয়াল ধসে পড়ে সেতুটি চরম হুমকির মুখে পড়তে পারে এমনটাই আশঙ্কা স্থানীয়দের। সেতুর এ অবস্থার কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় যানবাহন ও যাত্রীদের। ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে এমনটি হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা জানান, গাইডওয়াল জুড়েই ফাটল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আর এ ফাটলের কারণে গাইডওয়াল জুড়ে বসানো পিলারগুলোও নড়বড়ে হয়ে গেছে। ফলে এলাকাবাসী ও পথচারীদের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের আশঙ্কা গাইডওয়াল ধসে পড়ে সেতুটিকে দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাঙ্গাবালী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন-উপজেলা সংযোগ সড়কের অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার ব্রিজ প্রকল্পের আওতায় চরমোন্তাজ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এমএ মতিনের বাড়িসংলগ্ন খালের ওপর ৬৬ মিটার সেতু ও ৩৫০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৬ কোটি টাকা। কিন্তু বছর না যেতেই ধসে পড়ে সংযোগ সড়কের একাংশ। পাশাপাশি গাইডওয়ালের গোড়ায় দেখা দিয়েছে ফাটল।
চরমোন্তাজ ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা বাহাদুর ইসলাম বলেন, ‘ভারী বর্ষণের কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়ালের নাজুক অবস্থা। কাজ করার ৬-৭ মাস পরই ধসে পড়ে সেতুটির সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়ালের একাংশ। ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে এমনটা হয়েছে। যদি দ্রুত কাজ না করা হয় তাহলে সেতুটি দিয়ে চলাচলে ঝুঁকি আরও বাড়বে।’
স্থানীয় ইজিবাইক চালক মো. সলেমান বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের এক বছরও পার হয়নি। এর আগেই সংযোগ সড়ক বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে। ঠিকাদার ঠিকঠাক মতো কাজ করেনি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুর কাজ করেছেন। এখন আমাদের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয় এই সেতু দিয়ে। আমাদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব সেতুটির সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়ালের সংস্কার করা হোক। এখন কাজটি না করলে আগামী বর্ষায় পুরো রাস্তা ভেঙে পড়বে। তখন মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে ঠিকাদার জামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও কল রিসিভ করেননি তিনি।
সেতুটির বেহাল অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে ঠিকাদারের সঙ্গে কথা হয়েছে। ঠিকাদার সংস্কার করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। আশা করি, দ্রুত সংস্কার কাজটি শেষ করা হবে। তা না হলে ঠিকাদারের বকেয়া টাকা দেওয়া হবে না। শুধু তাই নয়, ঠিকাদারের জামানতের টাকাও আমাদের হাতে রয়েছে। সব কাজ ঠিকঠাকভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার পর তার টাকা দেওয়া হবে।’