সমাজের সব মানুষ একই রকম নয়। সবাই যৌক্তিক আচরণ করবে, এমন আশা করাও ঠিক নয়। যারা তুচ্ছ কারণে চরম কলহে জড়িয়ে পড়ে তাদের সামলানোর জন্য তাই কিছু কৌশল জেনে রাখা ভালো। কলহপ্রিয় মানুষদের সামলানোর কৌশল জানিয়েছেন লিজা হক
যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে যেও না : কলহপ্রিয় মানুষ নিজের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারে না। অন্যের পছন্দ-অপছন্দ তারা নিজেরা ঠিক করে দিতে চায়। দু-একবারের আচরণেই তুমি বুঝে যাবে তারা কেমন প্রকৃতির। একবার তাদের পরিচয় পাওয়ার পরে তাদের মন্তব্যে আর ঘাবড়ানোর প্রয়োজন নেই। নিজের কাজের প্রতি তাদের সমর্থন আশা করা ছেড়ে দেওয়াই ভালো। নিজের পছন্দের যৌক্তিকতা তাদের কাছে তুলে ধরার প্রয়োজন নেই। তোমার পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কোনো কথা বলতে এলে শান্তভাবে বলে দেবে, নিজের জন্য কোনটা ভালো সেটি আমি ভালোভাবেই জানি। তবে যারা তোমার শুভাকাক্সক্ষী তাদের পরামর্শ অবশ্যই বিবেচনা করে দেখবে।
বাদানুবাদে যাবে না : কলহপ্রিয় মানুষেরা সহজে ছাড়ার পাত্র নয়। তারা তোমাকে উসকাবে ঝগড়া করতে, তর্ক-বিতর্কে জড়াতে। কিন্তু এই প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না। কোনোক্রমেই কোনো ধরনের বাদানুবাদে জড়ানো যাবে না। কারণ তর্ক-বিতর্ক শুরু হলে শুধু তাকেই নয়; তোমাকেও অন্যরা কলহপ্রিয় হিসেবে চিহ্নিত করবে। তোমার সম্পর্কে মানুষকে নেতিবাচক ধারণা দেবে। সে জন্য উসকে দিতে চাইলে তুমি বলতে পারো, বুঝতে পারছি আপনি কী বলতে চাইছেন। ঠিক আছে, এই বিষয়ে আর কথা না বলি। অন্য কিছু নিয়েই না হয় আলাপ হোক!
আত্মরক্ষার লড়াইও নয় : কোনোক্রমেই যখন তোমাকে ঝগড়াঝাটিতে টেনে নামাতে পারবে না, তখন এসব কলহপ্রিয় মানুষেরা বিষয়টি নিয়ে নানারকম যুক্তি-প্রতিযুক্তি উপস্থাপন করতে পারে। এমনকি এসব কথা অন্যদের কাছেও বলে বেড়াতে পারে। তবে তুমি যদি সত্যিই কলহ এড়াতে চাও তাহলে আত্মরক্ষার নামেও এই যুক্তি-প্রতিযুক্তির লড়াইয়ে যোগ দেবে না। কারণ প্রথমে যুক্তির লড়াই থাকলেও পরে এ লড়াই শুধুই কুৎসায় পর্যবশিত হবে। তাই প্রসঙ্গটি শেষ করতে বলতে পারো, এই পরিস্থিতিটি গভীরভাবে ভেবে দেখেছি। এটা নিয়ে আর আলোচনা করতে চাচ্ছি না।
ব্যাখ্যা করতে যেও না : এরপর হয়তো সে নাছোড়বান্দা তোমাকে নিজের অবস্থানের বা সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করতে বলতে পারে। অজুহার হতে পারে যে, সে তোমার অভিমত বা অবস্থান সম্পর্কে উপলব্ধি করতে চায়। কিন্তু এটি শেষ পর্যন্ত আবারও সেই বাদানুবাদ, যুক্তি-প্রতিযুক্তি উপস্থাপন, কলহ প্রভৃতিতে পর্যবশিত হতে পারে।
সে জন্য এবারও তোমাকে এই ফাঁদ এড়িয়ে যেতে হবে। তাই তাকে জানিয়ে দাও, আমি এটা আগেই ব্যাখ্যা করেছি। আমি চাই আমার সিদ্ধান্তকে আপনি সম্মান করেন এবং এ বিষয়ে আলোচনার ইতি টানুন। এটা নিয়ে আর আলোচনা নয়। এটাই হলো কথোপকথনের চূড়ান্ত সমাপ্তি। বিদায় নিয়ে স্থান ত্যাগ করো। নিজের কাজে লেগে পড়ো।