বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

সরকারি সড়কে ঘর নির্মাণের অভিযোগ

আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম

দেখলে যে কেউ মনে করবে পরিত্যক্ত পুরনো কোনো দালান বা সেতু ভাঙা হচ্ছে! কিন্তু না, এটি একটি সড়ক উপড়ে ফেলা হচ্ছে। কারণ সড়কটির একমাথা দখল করে  ঘর তুলেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী। তাই সড়কের আরেক মাথা উপড়ে ফেলা হচ্ছে যাতে কেউ দেখে বুঝতে না পারে এখানে কোনো সড়ক ছিল।

দাউদকান্দি উপজেলার বিটেস্বর ইউনিয়নের বীরবাগ গোয়ালী গ্রামে এ দৃশ্য দেখা যায়। সড়কটি ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে কয়েক বছর আগে নির্মান করা হয়েছে। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না বলে জানান ভুক্তভোগীরা। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বিটেস্বর ইউনিয়নের চরগোয়ালী-বিটেস্বর সড়কের বীরবাগ গোয়ালী হতে খলিলাপাড়া পর্যন্ত সড়কটি কয়েক বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে পাকা করা হয়। স্থানীয় প্রভাবশালী সেলিম তালুকদার সড়কের একমাথা দখল করে ঘর নির্মাণ করেন। সড়কটি আরেক মাথা ভেকু (স্কাভেটর) দিয়ে ভেঙে উপরে ফেলা হয়েছে। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে চালক দ্রুত স্কাভেটর নিয়ে চলে যান।
 
ভুক্তভোগী ইঞ্জিনিয়ার বেনজির আহাম্মেদ বলেন, কয়েক বছর আগে স্থানীয় তিনজন চেয়ারম্যান মিলে দরবার করে সড়কটি পাকাকরণ করা হয়। সড়কের সাথেই আমার বাড়ির ফটক। সেই সরকারি সড়কটি দখল করে আমার বাড়ির ফটকের মুখে ঘর নির্মাণ করে বন্ধ করে দিয়েছে সেলিম তালুকদার। 

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। আরেক ভুক্তভোগী তানিয়া আক্তার বলেন, প্রায় আট বছর আগে আমাদের ১২ শতক জমির পাঁচ শতকের উপর দিয়ে জোর করে রাস্তা করা হয়। পরে আমার বাবার কাছ থেকে জোর করে নামমাত্র দামে রেজিস্ট্রি করে নেয় সেলিম তালুকদার ও তার ভাইয়েরা। রেজিস্ট্রি করা তিন মাস পর এই দুঃখে বাবা স্ট্রোক করে মারা যায়। এখন আবার আমাদের বাকি জমিটুকু বালু ফেলে দখল করে নিচ্ছে। আমরা গরীব মানুষ তাই আমাদের কথা কেউ শুনে না।

এ ব্যাপারে সেলিম তালুকদার বলেন, সড়কের উপর না মালিকানা জায়গায় মাদরাসার ঘর উঠানো হয়েছে বলে জানি। আর মাদরাসার কমিটি আছে। আমি কেউ না। আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। 

মাদরাসার মুহতামিম নাদিম আহমেদ বলেন, মাদরাসার ঘরটি সড়কের দক্ষিণ পাশে ছিল, এখন কী কারণে মাদরাসার ঘরটি সড়কের উপর উঠানো হয়েছে জানি না, শুনেছি সড়কটি দক্ষিণ পাশে নেওয়া হবে। 

বিটেশ্বর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সরকারি অনুদানে নির্মিত সড়ক ও নামফলক ভাঙা ঠিক হয়নি। আবার চলাচলের পথ বন্ধ করে রাস্তায় ঘর নির্মাণ করাও ঠিক হয়নি। এসিল্যান্ড (উপজেলা সহকারি কমিশনার) মহোদয়কে বিষটি অবগত করেছি। 

দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. রেদওয়ান ইসলাম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে মিমাংসার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। তারা সমাধান করতে না পারলে পরবর্তী ব্যবস্থা নিব। আর সরকারি সড়কটি ভাঙার ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত