তিন বছর ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্য আলোচনা শুরুর প্রক্রিয়া চলছে। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেদ্দায় ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে যুক্তরাষ্ট্র। আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই ইউক্রেনের পক্ষ থেকে আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর কথা বলা হয়েছে। কিয়েভের দেওয়া এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের সম্ভাবনা দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
আলোচনায় অংশ নিতে জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাকের নেতৃত্বে ইউক্রেনের একটি উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক ও সামরিক প্রতিনিধিদল এখন জেদ্দায় অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিকদের একটি প্রতিনিধিদলও ইতিমধ্যে জেদ্দায় পৌঁছেছে, যাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ এবং বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। তাদের আগে গত সোমবার যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকের জন্য সৌদি আরব পৌঁছেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। যদিও মূল আলোচনায় তিনি উপস্থিত থাকবেন না বলে জানা যাচ্ছে।
ইউক্রেনের আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, আমি বলছি না যে, এটাই যথেষ্ট। কিন্তু সংঘাতের অবসান ঘটানোর জন্য এ ধরনের ছাড় দেওয়ার মানসিকতা দরকার ছিল। রুবিও আরও বলেন, শান্তিচুক্তির জন্য ইউক্রেনের মনোভাব পরিষ্কার করা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তিনি এটাও বলেন যে, যুদ্ধের ইতি টানার জন্য রুশদের যেমন কঠিন কাজ করতে হবে, তেমন ইউক্রেনকেও কঠিন কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
মঙ্গলবারের আলোচনায় কিয়েভের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌ ও আকাশপথে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন ইউক্রেনের একজন কর্মকর্তা। যদিও এ ধরনের আংশিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। তাদের মতে, এ রকম চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধে ইউক্রেন নিজের পরাজয় ঠেকানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির আলোচনাকে সামনে রেখে সোমবার জেদ্দায় পৌঁছান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করেছেন। সৌদি যুবরাজের সঙ্গে বৈঠকের পর সোমবার রাতে নিজের একটি ভিডিও বার্তায় মি. জেলেনস্কি আশা প্রকাশ করেছেন যে, মঙ্গলবারের আলোচনার মাধ্যমে একটি বাস্তবভিত্তিক ফলাফল বের হয়ে আসবে। এদিকে, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে সোমবার যুক্তরাজ্যের দুই কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে মস্কো। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের রাশিয়া ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে করে ইউরোপের সঙ্গে খারাপ হতে থাকা রাশিয়ার সম্পর্ক আরও অবনতি হলো।