পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের বোলান এলাকায় একটি ট্রেনে হামলা চালিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি ‘জাফফার এক্সপ্রেস’ নামের ট্রেনে থাকা ১৮২ জনকে জিম্মি করে বলে দাবি করেছে। তারা ২০ সামরিক কর্মকর্তাকেও হত্যার দাবি করেছে। অন্যদিকে গতকাল রাতে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ট্রেনে থাকা ৮০ জিম্মিকে উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের সঙ্গে গোলাগুলিতে ১৩ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়েছে। বেলুচিস্তান সরকার অবশ্য বলছে, ট্রেনে কোনো সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন না।
জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার ট্রেনটি বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের পেশোয়ার শহরে যাচ্ছিল। স্থানীয় কর্র্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্রেনটিতে প্রায় ৪০০ যাত্রী ছিলেন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ট্রেনটি তখন প্রত্যন্ত পার্বত্যাঞ্চলের একটি সুড়ঙ্গর ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রেললাইন উড়িয়ে দেয় এবং জাফর এক্সপ্রেসের ওপর গুলি চালায়। আকস্মিক হামলায় ট্রেন থেমে যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ ট্রেন এবং জিম্মিরা বিএলএ’র কবজাতেই থাকার খবর পাওয়া যায়। সে সময় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীটি জানায়, তারা পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ে লিপ্ত।
বিবৃতিতে বিএলএ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘সামরিক হস্তক্ষেপ চলতে থাকলে জিম্মিদের মেরে ফেলা হবে। বিবিসিকে পুলিশ জানায়, ট্রেনটিতে যেখানে হামলা হয়েছিল সেখানে জিম্মিদের উদ্ধার করতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং হেলিকপ্টারও পাঠানো হয়েছে।
পাকিস্তানের দ্য ডন পত্রিকাকে বেলুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, ট্রেনে তুমুল লড়াই চলার খবর এসেছে। এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ট্রেনটি পর্বতঘেরা সুড়ঙ্গের সামনে আটকা পড়ে আছে। ঊর্ধ্বতন এক সেনা কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, ১০০ জনের বেশি সেনা কর্মকর্তা ওই ট্রেনে কোয়েটা থেকে যাত্রা করেছিলেন।
কোয়েটার রেলওয়ে কন্ট্রোলার মোহাম্মদ কাশিফ বিবিসিকে বলেছেন, ট্রেনে ৪০০ থেকে ৫০০ যাত্রীর বুকিং ছিল। তবে তাদের মধ্যে কতজন জিম্মি হয়েছে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি।
তবে স্থানীয় এক রেলওয়ে কর্মকর্তা বলেছেন, অন্তত ৬০ জন যাত্রীর একটি দল ট্রেন ছেড়ে এসে কাছের রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছেছে। তারা সব বেলুচিস্তান প্রদেশেরই স্থানীয় মানুষ। প্যারামিলিটারি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে কোয়েটার রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলেছেন, নারী ও শিশুরা ট্রেন ছেড়ে এসেছে এবং তারা সিবি শহরের দিকে যাচ্ছে। তাদের সঠিক সংখ্যা কত তা জানা যায়নি।