ধর্ষণ মামলার বাদীসহ বরগুনায় এক রাতে দুটি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাতে বরগুনা সদর উপজেলার দুটি আলাদা জায়গা থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুটি ঘটনায় নিহতরা হলেন বরগুনা পৌর শহরের কড়ইতলা এলাকার বাসিন্দা মন্টু দাস (৩৫) ও বদরখালী ইউনিয়নের মিরাজ মুন্সি (৪৫)। তাদের মধ্যে মন্টু দাস তার মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার বাদী ছিলেন।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে বরগুনা সদরের প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসংলগ্ন ঝোপ থেকে মন্টু চন্দ্র দাসের কাদামাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি বরগুনা পৌরশহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালীবাড়ি কড়ইতলা এলাকার মৃত জয়েশ্বর দাসের ছেলে।
স্বজনরা জানান, নির্ধারিত সময়ে বাড়িতে না আসায় মন্টুর মোবাইল ফোনে কল দিলে বাড়ির পেছনের পুকুরপাড়ে মোবাইল ফোনের রিংটোনের আওয়াজ শুনতে পান তারা। পরে সেখানে গিয়ে মন্টুর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তার পরনের কাপড় ছিল ভেজা, হাতে কামড়ের দাগ ও সারা শরীর কাদামাখা ছিল। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, কিছুদিন আগে নিহত মন্টুর বড় মেয়েকে ধর্ষণ করে এলাকার কয়েকজন বখাটে। এ ঘটনায় বাদী হয়ে গত ৫ মার্চ বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন তিনি। একইদিন মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকেই মন্টু ও তার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল ধর্ষণ মামলার আসামিরা। গতকাল আদালতে ওই মামলার নির্ধারিত তারিখ ছিল।
নিহতের স্ত্রী শিখা রানী দাস বলেন, ‘রাতে আমাকে কল দিয়ে জানায় বাসায় ফিরতে দেরি হবে। পরে রাত গভীর হলেও বাসায় ফেরেনি। এরপর ফোনে কল দিতে থাকলে ঝোপের মধ্যে রিংটোন বাজতে শুনি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘মন্টুর সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের পরিচয়। ওর সঙ্গে কারও কোনোদিন তর্কও হয়নি। ওর মতো ভালো মানুষ এই এলাকায় নেই। আমি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি চাই।’