এখন চলছে ঋতুরাজ বসন্ত। প্রকৃতি নানার রঙের বর্ণিল সমাহারে গাছে গাছে শোভাময় দ্যুতি ছড়াচ্ছে। শিমুল আর পলাশের লাল রঙে বসন্ত নীরব-নিস্তব্ধ প্রকৃতির অমলিন বদনে দৃপ্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে। গাছে গাছে সবুজ পাতার নতুন কুড়ি এসে পত্র-পল্লবকে সবুজে সবুজে ঢেকে দিচ্ছে। ঋতুরাজ বসন্তে প্রকৃতি যেন ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে। গাছে গাছে কোকিলের মিষ্টি গলার সুরই বলে দেয় এখন বসন্তকাল। যেদিকে চোখ যায় শিমুল-পলাশে আর মাদার ফুলে লাল রঙ যেন সবারই দৃষ্টি কেড়ে নেয়। এ সময় ফোটে অশোক, হিমঝুড়ি, মহুয়া, মাদার, মুচকুন্দ, রুদ্রপলাশ, শাল, স্বর্ণ শিমুল, ক্যামেলিয়া, রক্ত কাঞ্চন, কুরচি, কুসুম, গাব, গামারি, জংলি বাদাম, দেবদারু, নাগেশ^রসহ অনেক ফুল। ঋতুরাজ বসন্তে মৌমাছিদের যেন ব্যস্ততা বেড়ে যায় মধু আহরণে। তারা এত ফুলের সমাহার দেখে যেন বিমোহিত হয়ে পড়ে। চারদিকে তখন ফুলের মিষ্টি সৌরভ ছড়িয়ে নানা ফুলেরা তাদের জানান দিতে থাকে। বসন্তে দেব কাঞ্চন তার ডালপালা চারদিকে ছড়িয়ে হাল্কা গোলাপি ফুলের পসরা সাজায়। আর কনক চাপা কাঁচা সোনা রঙের বাহারি আয়োজনে প্রকৃতিকে সাজায়। রুদ্র পলাশ থোকায় থোকায় ফুলে ডালি নিয়ে বাসন্তী রঙের বর্ণিল রূপের পাঞ্জেরী মেলে প্রকৃতির মধ্যে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকে। তবে কৃষ্ণচূড়াও এ সময় কম যায় না। বিশাল এলাকা জুড়ে তার ফুলের ডালা মেলে শিল্পীর কণ্ঠে বেদনার সুর তুলে দেয়। বসন্তে পলাশ ফুলকে বলা হয় আগুন ঝরা ফুল। গাঢ় লাল রঙের ফুলে ভরে থাকে গাছটি। লাল ফুলের রঙ ছড়িয়ে তখন মনে হয় যেন বনে বনে আগুন লেগেছে। বসন্ত প্রকৃতির মাঝে শান্ত ভাব ছড়িয়ে দেয়। তার সুশীতল বাতাস দেহমনে প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। না শীত না গরম। এমনই ঋতু প্রকৃতির জন্য বিরল। পৃথিবীতে এমন ঋতু মেলা ভার। তাই তো বসন্তের মিষ্টি সুবাস আমাদের সবাইকে মোহিত করে।