বই মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু, প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়ের মানুষের বই পড়ার আগ্রহ এবং পরিমাণ দুটিই কমছে। মানুষকে বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করতে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে বইকে পাঠকের কাছে সহজলভ্য করে দিতে সারাদেশের বিভিন্ন জেলা এবং বিভাগীয় শহরে অদম্য ’১৯ ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় অদম্য ’১৯ পাঠাগার আয়োজন করে থাকে বই বিনিময় উৎসবের।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ‘পাঠকের দুয়ারে বই’ স্লোগানকে ধারণ করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর এবং অদম্য ’১৯ পাঠাগার যৌথভাবে পঞ্চগড়ের এম আর কলেজ চত্বরে দিনব্যাপী আয়োজন করে ভিন্ন জগৎ প্রেজেন্টেস ‘বই বিনিময় উৎসব-পঞ্চগড়’। আয়োজনে সার্বিক সহায়তায় ছিল সম্মিলিত পাঠাগার আন্দোলন, আইডিয়া প্রকাশনী।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে কয়েক হাজার বই বিনিময় হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। একজন পাঠক জানান, এমন আয়োজন পঞ্চগড়ে প্রথম, বাসায় পড়া হয়ে যাওয়া অনেক বই থাকে, যেগুলো হয়তো পরে আর কখনো পড়া হয় না, সেগুলো দিয়ে নতুন বই সংগ্রহ করার যে অসাধারণ সুযোগ আয়োজকরা তৈরি করে দিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। অন্য একজন পাঠক জানান, এমন আয়োজনে প্রথম এলাম, অনেক অনেক বই দেখে ভালোই লাগছে। তা ছাড়া এটা পাঠকদের জন্য চমৎকার সুযোগ, এমন আয়োজন নিয়মিত করার অনুরোধ করব আয়োজকদের।
অদম্য ’১৯ পাঠাগারের পরিচালক তায়েব মৃধা জানান, অদম্য ’১৯ সবসময়ই আউট অফ বক্স চিন্তা করে, কীভাবে এবং কত আকর্ষণীয়ভাবে পাঠকের কাছে পৌঁছানো যায়, তাদের বইয়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা যায় সে চেষ্টাই করি আমরা। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় বই বিনিময় উৎসবের আয়োজন করে থাকি। মানুষকে যদি এই বই বিনিময় উৎসবের সঙ্গে পরিচিত করানো যায় তবে আশা করা যায়, মানুষ বই পড়তে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ হবে।
রূপান্তরের পঞ্চগড় জেলার পরিচালক সুমাইয়া জানান, রূপান্তর আর অদম্য ’১৯ পাঠাগার এমন আয়োজন রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ধারাবাহিকভাবে করতে চায়। ব্যাপকভাবে পাঠকের কাছে বই পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের এই প্রচেষ্টা। আশা করছি পাঠকরা উপকৃত হবে এবং আমরা খুব শিগগিরই আবারও পঞ্চগড়ে আয়োজন করব বই বিনিময় উৎসবের।
বই পড়লে বিশে^র বিভিন্ন দেশ, জাতি, ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। জানা যায় দেশের ইতিহাস। এটি মননশক্তি ও বিবেককে জাগ্রত করে। তাই বই পড়ার অভ্যাস তাই জাতি গঠনে সহায়তা করে। এ বিষয়ে রুশ লেখক ও দার্শনিক তলস্তয়ের একটা উক্তি আছে। তিনি বলেছেন, জীবনে তিনটি জিনিস প্রয়োজন বই, বই এবং বই।
সেই বইকে কেন্দ্র করে এমন উদ্যোগ সমাজে যত বেশি বেশি হবে, ততই সমাজে ইতিবাচকতার আলো ছড়িয়ে পড়বে।
লেখক : শিক্ষার্থী, অনার্স প্রথম বর্ষ
মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ, পঞ্চগড়