মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর ব্যাপক মাত্রায় বিমান হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের এই হামলায় দেশটিতে নারী ও শিশুসহ ২৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে অনেকেই। এর মধ্যে রাজধানী সানায় ১৩ জনের নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে হুতিদের পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটির মিত্রদের বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কড়া জবাব দিতে এসব হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, জাহাজে হামলা বন্ধ না হলে ভয়ংকর পরিণতি ঘটতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের অর্থায়নে হুতিরা যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং আমাদের সেনা এবং বন্ধুদের লক্ষ্য করেছে। তাদের জলদস্যুতা, সহিংসতা এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে এবং অনেকের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। তিনি আরও বলেন, লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের অপ্রতিরোধ্য প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করব। মূলত ফিলিস্তিনের গাজায় হুতিদের আঞ্চলিক মিত্র হামাসের বিরুদ্ধে অভিযানের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্র দেশগুলোর জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল গোষ্ঠীটি। যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হুতিরা। ইরান সমর্থিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি ইসরায়েলকে শত্রু মনে করে। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় ইয়েমেনের রাজধানী সানা এবং উত্তরে অবস্থিত সাদা অঞ্চলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী অঞ্চলটিতে হুতি বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। সানা এবং ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল হুতিদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, এটি দেশটির আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার নয়। এক বিবৃতিতে হুতিরা ইয়েমেনের রাজধানী সানার আবাসিক এলাকাকে লক্ষ্য করে দুষ্টু আগ্রাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যকে দোষারোপ করেছে। যুক্তরাজ্য এই হামলায় অংশ না নিলেও, যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়মিত জ্বালানি সহায়তা করছে বলে উল্লেখ করেছে গোষ্ঠীটি।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুতিরা লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে কয়েক ডজন বাণিজ্যিক জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং ছোট ছোট নৌকা দিয়ে হামলা করেছে। বাণিজ্যিক জাহাজ রক্ষার জন্য পশ্চিমা যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন অথবা তাদের সামরিক লক্ষ্যবস্তুর আশপাশের অঞ্চলে বিমান মহড়া চালিয়েও গোষ্ঠীটিকে নিবৃত্ত করা যায়নি। যার ফলে প্রধান শিপিং কোম্পানিগুলোকে লোহিত সাগর ব্যবহার বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে। অথচ প্রায় ১৫ শতাংশ বৈশ্বিক বাণিজ্যিক জাহাজগুলো এই সাগর ব্যবহার করে। এর পরিবর্তে এখন জাহাজগুলোকে দক্ষিণ আফ্রিকার আশপাশে আরও দীর্ঘ পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে।