শিশুর দুরন্তপনা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু কখনো কখনো এই দুরন্তপনা স্বাভাবিকের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। অনেক বাবা-মা এই দুরন্তপনার ব্যাপারটি লক্ষ করতে চান না। তাদের কাছে এটা যেন শিশুর স্বাভাবিক ব্যবহারের অংশ। কিন্তু আসলে তা নয়। অতি দুরন্ত শিশু যখন স্কুলে যায়, তখন স্কুল থেকেও চিঠি আসে অভিভাবকের কাছে যে, তার সন্তান দুরন্ত, অমনোযোগী এবং অন্য শিশুদের এতে সমস্যা হচ্ছে। এই দুরন্তপনা এক বিশেষ ধরনের মনোরোগ। আমরা যাকে বলি অঃঃবহঃরড়হ উবভরপরঃ ঐুঢ়বৎ অপঃরাব উরংড়ৎফবৎ বা সংক্ষেপে অউঐউ. সাধারণত তিন থেকে সাত বছরের শিশুদেরই অউঐউ-এর বহিঃপ্রকাশ ঘটতে দেখা যায়। ছেলে শিশুরা মেয়ে শিশুদের তুলনায় সাধারণত বেশি আক্রান্ত হয়।
কারণ
অতিরিক্ত মানসিক চাপ, শ্রেণিকক্ষে বৈরী পরিবেশ, শিশুর শিখতে সমস্যা, খুব বেশি অপরিণত শিশুর জন্ম, মস্তিষ্কের আঘাত, ইনফেকশন ইত্যাদি।
লক্ষণ
কোনো কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার বিষয়ে আগ্রহ কম বা পারে না পড়ালেখা এবং খেলায় মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যর্থ এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে সহসা স্থানান্তরিত হয় কথা শুনতে একদম অনাগ্রহ যে কাজগুলোয় মনোনিবেশ দরকার সে কাজগুলো করতে ব্যর্থ হয়।
অস্থিরতার লক্ষণ
সবসময় চিৎকার আস্ফালন এবং হাত-পা ছোড়া ও ক্লাসরুমের সিট ছেড়ে উঠে পড়ছে বারবার অযথা দৌড়াদৌড়িতে লিপ্ত অথবা অকারণ সিঁড়ি বেয়ে উঠছে কিংবা নামছে বেশি কথা বলতে থাকে। সবসময় বায়না।
রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া।
অতি আবেগের লক্ষণ
বিপদ কোনটি তা বোঝে না।
প্রশ্নের আগেই উত্তর দিয়ে দেয়।
শৃঙ্খলাকে ভেঙে ফেলে।
কী করতে হবে
বাবা-মায়ের ধৈর্য ধরতে হবে।
ছোট ছোট ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে বকা বা মারা যাবে না। নিয়মমাফিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত করাতে হবে বেশিক্ষণ বসে থাকার কাজ দেওয়া যাবে না টিভি দেখা কমাতে হবে।
অবশ্যই শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
পরিশেষে
এডিএইচডি পুরোপুরি ভালো হবে না। তবে তারা পরিবেশের সঙ্গে কেমন করে খাপ খাওয়াতে হবে তা শিখবে। তারা স্কুলে ভালো না করলেও কর্মক্ষেত্রে করতে পারে ভালো। সুতরাং হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
যেসব ক্যারিয়ার এডিএইচডি বাচ্চাদের জন্য ভালো তা হলো যুক্তিনির্ভর, আইটির কাজ, খেলাধুলার জগৎ, সম্পাদনা ও ব্যবসাবাণিজ্য।
যদি এডিএইচডির বাচ্চার চিকিৎসা না হয় তবে সে তার স্কুলে খারাপ করতে পারে। আত্মমর্যাদাহীন হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিত্বে রূপান্তরিত হয়।