বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত চার মাসে ভারত থেকে ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ১৭ নভেম্বর থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত এই চাল আমদানি করা হয়েছে। দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত ৯২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শুল্কমুক্ত কোটায় এ চাল আমদানি করে। তবে ভারত থেকে চাল আমদানি অব্যাহত থাকলেও দেশের বাজারে দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়ছে না।
দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল ও ক্রেতা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সরকার দেশের শীর্ষ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাইরের দেশ থেকে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে বাইরের দেশ থেকে চাল আমদানির এ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
কাস্টমস সূত্র জানায়, আটটি চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গত ১৭ নভেম্বর থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি করেছে। সারা দেশে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ৯২ প্রতিষ্ঠানকে। ২ লাখ ৭৩ হাজার টন সেদ্ধ এবং ১ লাখ ১৯ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাদের। অনেক প্রতিষ্ঠান এ সময়ের মধ্যে আমদানি করতে পারেনি। তারপরও সরকার ২৫ দিন সময় নির্ধারণ করে দেয় আমদানিকৃত চাল বাজারজাত করার জন্য। আশানুরূপ চাল আমদানি না হওয়ায় পরে তা প্রথম দফায় ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ায় সরকার। তারপরও আমদানি ধীরগতির কারণে আবারও সময় বাড়ায় সরকার। এভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানি না হওয়ায় এবারও চতুর্থবারের মতো আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে সরকার। এ সময়ের মধ্যে সব চাল আমদানি হলে বাজারে চালের দাম কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে চাল আমদানি অব্যাহত থাকলেও দামে কোনো প্রভাব পড়ছে না। বরং লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। রোজার শুরু থেকেই সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৪-৫ টাকা বেড়েছে। অব্যাহতভাবে চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষরা।
চাল ব্যবসায়ী দীন মোহাম্মদ বলেন, রোজার শুরুতেই চালের দাম কেজিতে ৪-৫ টাকা বেড়েছে। রোজার আগের ৬৪ টাকা কেজি দরের ২৮ জাতের চাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৬৯ টাকা, ৭২ টাকার মিনিকেট ৭৬ টাকা, ৫২ টাকার মোটা চাল ৫৬ টাকা, ৮৪ টাকার বাসমতি চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৮-৯০ টাকা কেজি। আমদানিকৃত ভারতীয় একটি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে।
বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) শামীম হোসেন জানান, ভারত থেকে আসা আমদানিকৃত চালের ট্রাক স্থলবন্দর অভ্যন্তরে ঢুকলেই দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা তা দ্রুত ছাড়করণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যাতে আমদানিকৃত চাল দেশের বাজারে দ্রুত সরবরাহ হতে পারে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, চাল আমদানির জন্য সরকার আবারও এক মাস সময় বৃদ্ধি করেছে। গত ৬ মার্চ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেসরকারিভাবে নন-বাসমতি সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির জন্য বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে এলসি খোলার সময়সীমা আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হলো।