প্রখ্যাত বাঙালি কবি, লেখক, সমালোচক ও সম্পাদক বুদ্ধদেব বসু ১৯৭৪ সালের ১৮ মার্চ কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। ১৯০৮ সালের ৩০ নভেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তার পরিবারের আদিনিবাস ছিল বিক্রমপুরের মালখানগরে। তার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের প্রথমভাগ কাটে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ঢাকায়। বুদ্ধদেব বসু ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯২৫), ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ (১৯২৭) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ (১৯৩০) ও এমএ (১৯৩১) ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা থেকে ‘প্রগতি’ (১৯২৭-১৯২৯) এবং কলকাতা থেকে ‘কবিতা’ (১৯৩৫-১৯৬০) পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনা তার উল্লেখযোগ্য কর্ম। রবীন্দ্র-উত্তর ‘আধুনিক কবিতা’ আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্বে পরিণত হন বুদ্ধদেব বসু। তার গ্রন্থ সংখ্যা শতাধিক। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ হলো : বন্দীর বন্দনা, কঙ্কাবতী, দ্রৌপদীর শাড়ী, শীতের প্রার্থনা: বসন্তের উত্তর। উপন্যাস: লাল মেঘ, রাতভর বৃষ্টি, পাতাল থেকে আলাপ, গোলাপ কেন কালো। গল্পগ্রন্থ: অভিনয়, অভিনয় নয়, রেখাচিত্র, ভাসো আমার ভেলা এবং নাটক তপস্বী ও তরঙ্গিণী, কলকাতার ইলেকট্রা, সত্যসন্ধ। প্রবন্ধ: কালের পুতুল, সাহিত্যচর্চা, স্বদেশ ও সংস্কৃতি। অনুবাদ: কালিদাসের মেঘদূত, শার্ল বোদলেয়ার: তার কবিতা, রাইনের মারিয় রিলকের কবিতা ইত্যাদি প্রসিদ্ধ। তপস্বী ও তরঙ্গিণী নাটকের জন্য তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার (১৯৬৭) লাভ করেন। ১৯৭০ সালে ভারত সরকার তাকে ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কারে ভূষিত করে।