পরিবেশ বিপর্যয় এই সময়ের আলোচিত বিষয়। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগসহ নানা কারণে প্রকৃতি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে। এসব কারণে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের প্রয়োজনীয়তা ও চাহিদা সারা বিশ্বে। পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং প্রকৃতিকে ঝুঁকিতে ফেলে কোনো প্রকল্প যেন না নেওয়া হয় সে জন্য উন্নত বিশ্বে পরিবেশবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও চাহিদাসম্পন্ন বিষয়। বাড়ছে পরিবেশবিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েটদের কর্মক্ষেত্রও।
কী পড়ানো হয়
পরিবেশবিজ্ঞানের একজন গ্র্যাজুয়েট ভূ-বিজ্ঞান থেকে শুরু করে জলবায়ু তত্ত্ব, সমুদ্র তত্ত্ব, উদ্ভিদ-ভূগোল তত্ত্ব, মৃত্তিকাবিজ্ঞান, বাস্তুসংস্থান বিদ্যা, দুর্যোগ মোকাবিলা, নগর পরিকল্পনা, গ্রামীণ পরিকল্পনা ইত্যাদি নানা বিষয়ে জেনে থাকে। তাই সরকারি বেসরকারি যে কোনো প্রকল্পের পরিবেশগত ঝুঁকি ও প্রভাব নিরূপণে পরিবেশবিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েটদের দরকার হচ্ছে।
চাকরির ক্ষেত্র
পরিবেশবিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েটদের দেশেই ভালো মানের চাকরি রয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে এনভায়নমেন্টাল সেল আছে। সেখানে তাদের চাকরির সুযোগ রয়েছে। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৃত্তিকা সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ, মাছ ও বন্যপ্রাণী সেবা অধিদপ্তর, জাতীয় বন পরিষেবা, খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগে চাকরির সুযোগ থাকছে। এছাড়া বিভিন্ন আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান যেমন সিটি করপোরেশন, পৌরসভায় আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবনসহ উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশগত ঝুঁকি নিরূপণের জন্য পরিবেশবিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েটদের দরকার হচ্ছে।
ট্যুরিজম সেক্টরেও অনেকের চাকরি হচ্ছে। তৈরি পোশাক শিল্পে এ বিষয়ের গ্র্যাজুয়েটদের প্রসপেক্ট অত্যন্ত উজ্জ্বল। গার্মেন্ট শ্রমিকদের নিরাপত্তা, কর্মপরিবেশ, স্বাস্থ্যঝুঁকি এসব নিরূপণে পরিবেশবিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েটদের দরকার হচ্ছে।
কোথায় পড়বেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শাবিপ্রবি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান অথবা মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান নামে ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নর্থসাউথ, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেন্ডেন্টসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পরিবেশবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা পড়ানো হচ্ছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ডসহ উন্নত দেশগুলো পরিবেশ শিক্ষায় সবচেয়ে বেশি বৃত্তি দিচ্ছে। কেউ চাইলে সহজেই বৃত্তি নিয়ে পরিবেশের ওপর মাস্টার্স ও পিএইডি করতে ওইসব দেশে ভালো চাকরির সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।
উপার্জন
পরিবেশবিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েটরা চাকরির শুরুতে অন্যদের চেয়ে বেশি বেতনে কাজ শুরু করতে পারেন। একজন ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটের বেতন প্রতিষ্ঠানভেদে ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেতনভাতা ও সুযোগ-সুবিধাও বাড়ে।