ফসলের ভালো দাম এবং আরও বেশি রাষ্ট্রীয় সহায়তার আইন ও সমর্থন নিশ্চিত করার জন্য চাপ দিতে গত বছরের শুরুর দিকে রাজধানী নয়াদিল্লি অভিমুখে মিছিল ডেকেছিল ভারতের কৃষকরা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের যাত্রা আটকে দিলে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তে অস্থায়ী শিবির গড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। সেই আন্দোলনরত কৃষকদের হটাতে এবার তাদের ওপর বলপ্রয়োগ করেছে পাঞ্জাবের পুলিশ। বুধবার রাতে বুলডোজারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের তাঁবু ও মঞ্চ। আটক করা হয়েছে আন্দোলনরত কয়েকশ কৃষককে।
আটকদের মধ্যে কৃষক নেতা সারওয়ার সিং পান্ধের ও জগজিৎ সিং দাল্লেওয়ালও আছেন। আনন্দবাজার জানিয়েছে, বুধবার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে ফেরার পথে মোহালি থেকে পাঞ্জাব পুলিশের হাতে আটক হন কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ দাল্লেওয়াল ও তার সঙ্গীরা। এরপর রাতেই অবস্থানস্থল থেকে কৃষকদের হটানো শুরু করে পুলিশ।
কৃষক নেতা গুরমনীত সিং মঙ্গত জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের নেতৃত্বে কেন্দ্রের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে কৃষক নেতারা শম্ভু সীমানায় অবস্থানস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। তখনই মোহালির কাছে দাল্লেওয়াল-সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
কৃষকদের উচ্ছেদের বিষয়ে পাঞ্জাবের ক্ষমতাসীন আম-আদমি পার্টি বলছে, তারা কৃষকদের দাবির পক্ষে। তবে ক্ষোভ কেন্দ্রীয় সরকারকে দেখানো দরকার, রাজ্যের ক্ষতি করে নয়। সীমানার মহাসড়কগুলো হচ্ছে রাজ্যের প্রাণশক্তি। আন্দোলনের জন্য দুটি মহাসড়ক দীর্ঘসময় ধরে বন্ধ থাকায় ব্যবসা ও শিল্পের ক্ষতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পাঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী হরপাল সিং চিমা।
পাঞ্জাবের বিরোধীদল বিজেপি এভাবে কৃষক নেতাদের আটক ও বিক্ষোভ দমনের তুমুল সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকার ও কৃষক নেতাদের মধ্যে আলোচনায় বিঘœ ঘটাতে চাইছে পাঞ্জাবের আম-আদমির সরকার। তবে কৃষক নেতাদের ক্ষোভের তীর কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই। ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ টিকায়েত বলেন, একদিকে সরকার
কৃষক সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে, অন্যদিকে কৃষকদের গ্রেপ্তার করাচ্ছে। দিল্লির বাইরে অবস্থান গেড়ে কৃষকরা বছরব্যাপী আন্দোলন চালানোর পর ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার তাদের আনা বেশ কয়েকটি কৃষি আইন বদলাতে বাধ্য হয়েছিল।