জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছিল ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটিও গঠন করে। তদন্তে শিক্ষক দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু অবন্তী আত্মহত্যার এক বছর পূরণ হলেও সেই কমিটি এখনো কাউকে বিচারের আওতায় আনতে সক্ষম হয়নি। অবন্তীকার মায়ের করা আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী রায়হান আম্মান সিদ্দিক বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছে।
মামলার নথি ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে সহযোগিতা চান অবন্তিকা। কিন্তু তা না পেয়ে ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে গত বছরের ১৫ মার্চ কুমিল্লার বাগিচাগাঁওয়ের বাসায় আত্মহত্যা করেন।
অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনমের অভিযোগ তার পরিবার এখনো জানতে পারেনি তদন্ত প্রতিবেদনে কী বলা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতায় ফেলে তার সঙ্গে প্রহসন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘মেয়েকে উচ্চশিক্ষার জন্য জবিতে ভর্তি করিয়েছিলাম, কত স্বপ্ন ছিল! কিন্তু কিছু শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মেয়েকে হারাতে হলো। জবি প্রশাসন এই মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না।’ অধ্যাপক জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাসকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের এই কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির বাকি তিন সদস্য হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাসুম বিল্লাহ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবুল হোসেন এবং সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ঝুমুর আহমেদ।
তদন্ত কমিটি আহ্বায়ক অধ্যাপক জাকির হোসনের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তদন্তের রিপোর্ট গত বছরের ১৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা প্রশাসনই বলতে পারবে। আমার এই বিষয়ে আর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তদন্ত রিপোর্টে কী আছে তা জানাতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী যেসব শিক্ষার্থী এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল তাদের শাস্তির জন্য শৃঙ্খলা কমিটিতে রিপোর্ট পাঠানোর কথা এবং শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী তাদের শাস্তি হবে। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট মোতাবেক অভিযুক্তদের শাস্তি হওয়া দরকার বলে মনে করেছে। পরবর্তী সিন্ডিকেটে শাস্তির বিষয়গুলো উঠে আসবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াস উদ্দিনকে ফোনে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে চাইলে একাধিক বার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গত বছরের ১৭ মার্চ ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন।