বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

মালবেরি চাষি রোকনুজ্জামান

আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:১২ এএম

দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে প্রথম মালবেরি ফলের চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার। ফল বিক্রিসহ চারা তৈরি করে বিক্রি করছেন। লাভজনক হওয়ায় আগামীতে এর চাষ আরও বাড়ানোর ইচ্ছা। সুমিষ্ট ফলের বাগান দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন। আগ্রহীরা চারা কিনছেন। হিলির খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের মংলা বালিপুকুর গ্রামের কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার তার লিচুর বাগানে দু-বছর আগে একটি মালবেরি গাছের চারা রোপণ করেন। চারা রোপণের পরের বছরেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। গত বছর ১৬ হাজার টাকার ফল ও ১৮ হাজার টাকার চারা বিক্রি করেছেন। এ বছরও আরও বেশি গাছে ফল ধরেছে; মানুষকে বিনামূল্যে দেওয়াসহ বিক্রি করছেন গাছের ফল। এলাকায় আবাদ বাড়াতে গত বছর চারা ২০০ টাকা করে বিক্রি করলেও এবারে ১০০ টাকা করে বিক্রি করছেন।

কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার বলেন, আমি হিলিতে প্রথমবারের মতো বস্তায় আদা চাষ করেছিলাম যা এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। দু বছর আগে সিলেট থেকে একটি চারা সংগ্রহ করে আমার লিচুবাগানে রোপণ করি। চারা  রোপনের পরের বছরই গাছে ফল আসে। প্রথমে ফলটি সবুজ থাকে, এরপর লাল হয় সম্পূর্ণ পেকে কালো হয়ে যায়। নতুন এই ফলটিকে মানুষের কাছে পরিচিত করতে বিনামূল্যে বিতরণ করি। গত বছর রমজানে বিভিন্ন মসজিদে ইফতারিতে সেই ফল বিতরণ করেছি। ফল খেয়ে ভালো লাগায় অনেকেই আমার বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি ৮শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এছাড়া চারা তৈরি করেও বিক্রি করছি। গত বছর ৩০ কেজি ফল বিক্রি করেছি । মানুষকে উপহার দিয়েছি ২০ কেজির মতো। গত বছর যে টাকার ফল ও চারা বিক্রি করেছিলাম এবারে তার চেয়ে অধিক পরিমাণ চারা ও ফল বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। একটি গাছ থেকেই যে পরিমাণ ফল আসছে তাতে করে এই ফলের চাষ লাভজনক হওয়ায় আগামীতে বড় পরিসরে মালবেরি ফলের চাষ করব।

আগ্রহী কৃষক লুৎফর রহমান বলেন,  স্থানীয় মসজিদে ইফতারিতে ফলটি খেয়েছি। সেই সঙ্গে বাজারে ফলটির বেশ চাহিদা রয়েছে অনেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলগাছটি দেখতে আগ্রহ জন্মানোয় রোকনুজ্জামান ভাইয়ের বাগানে দেখার জন্য এসেছি। এত পরিমাণ গাছে ফল ধরেছে যে গাছের পাতার চেয়ে ফলের সংখ্যা বেশি। আগামীতে আমিও এই ফলের গাছ লাগাতে চাই। ইতিমধ্যেই রোকনুজ্জামান ভাইয়ের থেকে দুটি চারা নিয়েছি আমার বাড়িতে লাগাব বলে।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, হিলির মংলা গ্রামের কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার প্রথমবারের মতো মালবেরি ফলের আবাদ করেছেন। ইতিমধ্যেই তার গাছে ফল আসতে শুরু করেছে, সেই ফল তিনি বিক্রি করছেন। চারা উৎপাদন করে বিক্রি করছেন। তবে যারা এই ফল চাষে আগ্রহী তারা প্রথমবার একটি বা দুটি গাছ দিয়ে শুরু করবেন। সফল হলে পরবর্তী সমওয় বড় পরিসরে চাষের পরামর্শ দেন তিনি। ফলটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন, অ্যান্ট্রি অক্সিজেন-সমৃদ্ধ ও ক্যানসার প্রতিরোধী জিন নতুন এই ফল মালবেরিতে বিদ্যমান। পুষ্টিগুণ ও বাজারমূল্যের দিক থেকেও ভালো সে ক্ষেত্রে যেসব কৃষক এই ফল চাষে আগ্রহী তারা কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে আগামীতে এই ফলের চাষাবাদ করতে পারেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত