বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

খাবারের ব্যবসা শুরুর কৌশল

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৫, ০১:২৬ এএম

দেশে খাবারের ব্যবসা খুবই সফল। ব্যস্ত মানুষের বাইরে খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে, তাই রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে আর ফুড ডেলিভারির চাহিদাও অনেক বাড়ছে। বিশেষ করে, স্বাদে নতুনত্ব আর সৃজনশীল উপস্থাপনা গ্রাহকদের মন জয় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

খাবারের ব্যবসা বলতে খাবার বা পানীয় প্রস্তুত, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন এবং বিক্রির কার্যক্রম চালানো হয়। ব্যবসার মধ্যে রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, স্ট্রিট ফুড, ফুড ট্রাক, অনলাইন খাবার ডেলিভারি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার উৎপাদনও থাকতে পারে।

ব্যবসার ধরন

খাবারের ব্যবসা অনলাইন ও অফলাইন দুভাবেই করা যায়। অনলাইন খাবারের ব্যবসার মধ্যে আছে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে খাবার বিক্রি এবং ডেলিভারি অ্যাপগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমে ব্যবসা চালানো। অফলাইনে, আপনি রেস্টুরেন্ট বা ক্যাফে পরিচালনা করতে পারেন, যেখানে গ্রাহকরা এসে খাবার খাবে। ফুড ট্রাক বা স্ট্রিট ফুড ব্যবসা পরিচালনা করে মোবাইল ফুড সার্ভিস দরকার। এছাড়া ক্যাটারিং সার্ভিসের মাধ্যমে বিভিন্ন ইভেন্টে খাবার সরবরাহের সুযোগ আছে।

যা দরকার

ব্যবসার পরিধির ওপর মূলধন নির্ভর করে। ছোট বা মাঝারি আকারের অফলাইন ব্যবসা শুরু করতে প্রাথমিক বিনিয়োগ হিসেবে অফিস ভাড়া, আসবাবপত্র, রান্নার সরঞ্জাম এবং কাঁচামাল কেনার জন্য অর্থ প্রয়োজন হবে। লাইসেন্স ও অনুমোদন নিতেও খরচ আছে। কর্মচারী নিয়োগ করে তাদের বেতনও আছে এর মধ্যে।

এই ব্যবসা শুরু করতে গেলে কিছু নির্দিষ্ট দক্ষতার প্রয়োজন হয়। প্রথমত, খাবারের মান এবং রেসিপি উন্নয়নের দক্ষতা থাকতে হবে। ব্যবসার পরিচালনা এবং হিসাবরক্ষণ, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট ও কাস্টমার সার্ভিসের জ্ঞানও দরকারি।

বিপণনের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের কৌশল জানা। পাশাপাশি ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে জানা। খাবারের ব্যবসা শুরু করার আগে মার্কেট রিসার্চ করাও জরুরি, কারণ ব্যবসার কৌশল ঠিক করতে সহায়তা করবে। টার্গেট অডিয়েন্স বা গ্রাহক কারা, তাদের পছন্দের খাবারের ধরন কী এবং কীভাবে খাবার অর্ডার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, জানা দরকার। খাবার ডেলিভারি অ্যাপে প্রতিযোগীদের মেন্যু এবং দামের বিশ্লেষণ করতে পারবেন। অ্যাপের মাধ্যমে মেন্যু, দাম এবং সেবার মানের ওপর সহজেই নজর রাখা। গ্রাহকদের কাছ থেকেও জানতে পারেন তারা কোন রেস্টুরেন্ট থেকে খাচ্ছেন এবং সেই রেস্টুরেন্টগুলোর খাবারের দামের বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা কী। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং গুগল রিভিউয়ের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রতিযোগীদের মূল্য এবং গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া দেখতে পারেন।

খাবারের ব্যবসায় প্যাকেজিং গুরুত্বপূর্র্ণ। প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে খাবারের মান ঠিক রাখা ও ব্র্যান্ড পরিচয় তুলে ধরা। মেন্যুতে নতুনত্ব এবং বৈচিত্র্য আনা প্রয়োজন। খাবারের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে কাঁচামালের খরচ, প্রস্তুত করার খরচ, ভাড়া ও অন্যান্য খরচ যোগ করে তার সঙ্গে লাভের হার যোগ করতে হয়। প্রতিযোগিতা ও বাজারের চাহিদা দেখে দাম ঠিক করা জরুরি, গ্রাহকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। এছাড়া, প্যাকেজিং ও ডেলিভারি খরচও যোগ করা। সময়ভেদে বা বিশেষ অফারে দাম কমানো-বাড়ানোর কৌশল জানতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার

সোশ্যাল মিডিয়া খাবার ব্যবসার জন্য কার্যকর প্রচারমাধ্যম। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং ইউটিউবের মাধ্যমে সহজেই গ্রাহকদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। ফেসবুকে ব্যবসার জন্য পেজ খুলে নিয়মিত খাবারের ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করুন। ইনস্টাগ্রামে মনোমুগ্ধকর ছবি এবং ভিডিও ব্যবহার করে হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেন। টিকটক এবং ইউটিউবে রান্নার প্রক্রিয়া বা রেসিপির ভিডিও শেয়ার করলে দ্রুত প্রচারের সুযোগ থাকে। ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে রিভিউ করাতে পারেন, যা নতুন গ্রাহক আকর্ষণে সহায়ক হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত