হাতের কনুইতে ব্যথা সাধারণ সমস্যা। যা বিভিন্ন কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে হতে পারে।
ব্যথার কারণ
১. চোট বা আঘাত : কনুইয়ে পড়ে যাওয়া, সরাসরি আঘাত লাগা বা হাড় ফেটে যাওয়া।
২. টেন্ডিনাইটিস : টেনিস এলবো বেশি পরিশ্রম বা কনুইয়ের বাইরের পেশির ওপর চাপ পড়ার কারণে। গল্ফার এলবো কুনইয়ের ভেতরের পেশিতে বেশি চাপ পড়ার কারণে।
৩. আর্থ্রাইটিস : অস্থিসন্ধির প্রদাহজনিত রোগ, বিশেষ করে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা অস্টিও আর্থ্রাইটিস।
৪. বার্সাইটিস : কনুইয়ের জয়েন্টের বারসা ফোলাভাব বা প্রদাহ।
৫. স্নায়ুর সমস্যা : আলনার নার্ভ কমপ্রেশন : হাতের পেছনের দিকের স্নায়ু চাপে পড়ে ব্যথা বা অসাড়ভাব।
পিনচড নার্ভ : স্নায়ু চাপে ব্যথা হয়।
৬. হাড় ভেঙে যাওয়া : আঘাতজনিত হাড় ভেঙে গিয়ে কনুইতে ব্যথা হয়।
লক্ষণ
ব্যথার ধরন : ব্যথা মৃদু থেকে তীব্র হতে পারে এবং নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকতে পারে।
ফোলাভাব : কনুইয়ের চারপাশ ফুলে যেতে পারে।
নড়াচড়ার সমস্যা : কনুই বাঁকানো বা সোজা করতে কষ্ট হয়।
ব্যথা ছড়িয়ে পড়া : অনেক সময় ব্যথা নিচের হাতে বা কাঁধ পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
অসাড়তা বা ঝিনঝিনি অনুভূতি : বিশেষ করে স্নায়ুর সমস্যায়।
চিকিৎসা
প্রাথমিক চিকিৎসা
বিশ্রাম: কনুইকে বিশ্রাম দিন এবং ভারী কাজ এড়িয়ে চলুন।
বরফ : ব্যথার স্থানে ১৫-২০ মিনিট বরফ দিন, দিনে ৩-৪ বার।
ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ : ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ দিয়ে কনুইয়ে হালকা পেঁচিয়ে রাখুন।
হাত উঁচু : হাত উঁচু করে রাখুন, যাতে ফোলাভাব কমে।
ওষুধ : প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক। আর্থ্রাইটিস থাকলে প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে কর্টিকোস্টেরয়েড।
ফিজিওথেরাপি : মাংসপেশি ও স্নায়ুর ব্যথা কমানোর পাশাপাশি কার্যক্ষমতা পুনরুদ্ধারের জন্য ফিজিওথেরাপি কার্যকর।
ইনজেকশন থেরাপি : টেনিস বা গল্ফার এলবোতে কর্টিকোস্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে।
সার্জারি: যদি হাড় ভেঙে যায়, স্নায়ুর চাপে সমস্যা হয় বা আর্থ্রাইটিস গুরুতর হয়, অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিকার
অতিরিক্ত ভারী কাজ এড়িয়ে চলা।
কাজের সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা।
পেশির শক্তি বাড়ানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা।