ইসলামের পাঁচ মৌলিক স্তম্ভের অন্যতম জাকাত। পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে ইমান আনার পর নামাজ ও রোজা সব মুসলমানের ওপর ফরজ। আর জাকাত ও হজ শুধু সামর্থ্যবান সম্পদশালী মুসলমানদের ওপর ফরজ। জাকাত ব্যবস্থা সমাজের দরিদ্র ও অসহায় জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করে।
জাকাত প্রদানের মাধ্যমে শরীর, মন ও সম্পদ পবিত্র হয়। এ ছাড়া ধনীদের সম্পদে গরিবদের যে অধিকার আছে তা জাকাত প্রদানের মাধ্যমে আদায় হয়। জাকাত প্রদান করলে আল্লাহতায়ালা ওই ব্যক্তির সম্পদে বরকত দান করেন। এ ছাড়াও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয় এবং সম্পদ বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে জাকাত না দেওয়ার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তার সম্পদের জাকাত দেয় না, কেয়ামতের দিন তার সম্পদ বিষধর সাপের রূপ ধারণ করবে এবং ওই ব্যক্তিকে কামড়াতে থাকবে।’ (সহিহ বুখারি) যারা নিয়মিত জাকাত আদায় করে তাদের জন্য কেয়ামতের দিন বিশেষ প্রতিদান নির্ধারিত আছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ সাত শ্রেণির মানুষকে আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন, তার মধ্যে একজন হলো সেই ব্যক্তি যে গোপনে দান-সদকা (জাকাত) করে।’ (মুসনাদে আহমদ) জাকাত একজন মুসলমানের সম্পদকে যেমন পরিশুদ্ধ করে, ঠিক তেমনই তার গুনাহ থেকেও মুক্তির সুযোগ করে দেয়। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আপনি তাদের সম্পদ থেকে সদকা (জাকাত) গ্রহণ করুন। এর দ্বারা আপনি তাদের পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবেন।’ (সুরা তওবা ১০৩) অর্থের অভাবে অনেক মানুষ চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও খুনের মতো খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যথাযথভাবে জাকাত প্রদান করলে এর মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক অভাব দূর করা এবং তাদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করা সম্ভব। জাকাত কেবল একজন ব্যক্তির নয়, বরং পুরো সমাজের কল্যাণ নিশ্চিত করে। এটি দরিদ্রদের মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করে, দারিদ্র্য দূর করে এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য কমায়।