রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

নাজিয়া আন্দালীব প্রিমার কবিতা

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:২৯ এএম

 

আমি ডুবে আছি অনাদিকাল

                       গাঢ় ঘোলা জলে;

এভাবে ডুবে থাকার মানে

       ভেসে থাকা তোমার মর্মমূলে।

 

আবার আসবো জেনো অপ্রস্তুত সময়ে

ইতস্তত ব্যাসার্ধ আঙ্গিনায়

                  আবারো হবো যামিনীর

ঘোর কালো অন্ধকার,

 

ব্যাকটেরিয়ার জীবন-যাপন করবো

                        শিরায়-উপশিরায়

ইথারের অদৃশ্য আলোয়

                      অভিযুক্ত এই আমি

            ব্যভিচারিণী হবো

                 স্বেচ্ছাচারিণী উদ্দামতায়;

প্রাত্যহিক বিবর্জিত কালো নেকাবে ঢাকা

                  রাত্রির অসীম সীমানায়!

 

আজকাল ‘ভালোবাসা’ শব্দটা কাউকে

                               বলতে শুনি না।

কেউ কি আর বলে না? না আমিই শুনি না!

 

কতবার তোমাকে বলতে চাইলাম,

শব্দসংকোচে বলে উঠতে পারলাম না।

 

এত সহজে বিলুপ্ত যে ভালোবাসা

আমি তো ভেবেছিলাম

এর থেকেও থাকবে কিছু বেশি।

 

বন্ধুত্বের আজ বড় বাড়াবাড়ি।

আমি আজন্ম ভালোবাসার খোঁজে ঘুরি।

তাই মিথ্যে মিথ্যে বন্ধুত্বের হাত বাড়াই

            বন্ধু হবার বাসনা জানাই।

 

প্রতিবার বাঁচাটা ওলট-পালট হয়ে যায়

ভেবেছিলাম বড় হয়ে সত্যি ভালোবাসবো;

বড় হয়ে দেখি সে কত দূরে

                 দেখা যায় তো যায় না।

কত প্রেমে, কত গানে, কত প্রাণ-মনে

বন্ধুত্বের কত সজীবতা দেখি

            ভালোবাসার অসীম কামনা

আজ একেবারেই চলে না।

 

আমাকে দেখে না এই পৃথিবী

এই পৃথিবী দেখেনি আমায়;

আমারই হাতের মুঠিতে রাখা

                        পরশপাথর...

 

যার ছোঁয়ায় স্বর্ণ হবে কয়লা,

সেই কয়লায় আঁকবো আমি

             এক উন্মুক্ত নরদেহ

 

তুমি পাথরের সেই

দাভিদের বক্ষবেষ্টনী

               দেখেছো কি?

 

তোমার হাতের শুভ্র বেষ্টনী

কবজ করে তাকে পৃথিবীর

তাবৎ মহিরুহ

 

              রুহের সাথে আত্মার

মনন যদি ঘটে, তবে আমার আকাশ

                  ধরবে তোমাকে

 

ঘোড়ার কেশরে যেমন লুকিয়ে

থাকে তার প্রেয়সীর চোখ

      আমি হাজার সাঁঝের মাঝে

তেমনি লুকিয়ে থাকি

আলো-নিবিড় তিমিরে

 

তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ

          তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ।।

 

 

এক সময় খুব ইচ্ছে হতো বাইজি হবার

          গান-নাচ-গহনায় ভরা ঘর আমার,

কেবল হাসি আর নূপুরের একটানা শব্দ,

ওমরাওজান, বেগমজান, বিস্মিল্লাহ;

          আরও কত রকম নখরাতি নাম!

 

সবুজ পান্না আর মোতি আমার

        বক্ষজুড়ে করবে আলিঙ্গন

                     নির্লিপ্ত স্বাধীন।

 

আজন্ম স্বাধীনতা বিলাসী আমি

         হাজার মখমলের জলসায়

বসাবো স্বাধীনতার

                 লাল পতাকা।

 

এক সময় ভারি শখ করেছিলেম বাইজি হবার।

 

আজকাল প্রায়শই ঘুম ভাঙে না আমার

ঘুমন্ত আমি আধো জাগরণে

                     দেখি আমার স্বপ্নগুলো,

 

ইউটিউবই তাই আমার স্বপ্নপূরণের অঞ্চল।

বিকলাঙ্গ নগ্ন হিমশীতল আমিবিভোর হই

সেই সাধেরাধে রাধে, কে মোর নাম জপে

যেখানে নূপুর, নিক্কন, কিন্নরীর শব্দ।

 

        আজ আমি অন্তঃপুরে

তোমা হতে অনেক দূরে

বাইজি নই, আমি এক অতি

       সাধারণ প্রেমময় রমণী।

 

তেলাপোকার সাথে সাথে বেঁচে গেলাম

তুমি আর আমিও।

 

দূরে দূরে সরে সরে রয়ে গেলাম

এ-ই না থাকার মতো থাকার

                  এক নতুন নামে!

 

আড়ম্বর একেবারেই পোষায় না

আমার, মেকি জীবনের ঢং;

তার থেকে এই ভালো

         কাছে কাছে রয়ে গেলাম

 

একদম হয়ে উঠলাম সমসাময়িক।

আর যাই হোক বেঁচে তো গেলাম।

 

এবারের মতো এই মৃত্যুকূপ থেকে।

প্রতিদিন দেখা না হলেও

কথা হওয়াও কম কিসে বলো।

জানি তো আজ মানুষে ভালোবাসায়

কথাও হয় না তেমন।

তাই পেরে গেলাম শুধু তুমি আর আমি,

নিরবচ্ছিন্ন নীল আকাশের মতো,

স্বাধীন সাবলীলতা বেছে নিলাম।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত