শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

আকাশে মেঘ কথায় উত্তেজনা

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১১ এএম

সকাল থেকেই সিলেটের আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা। বৃষ্টিও হয়েছে এক পসলা, বাংলাদেশের অনুশীলনে দিয়েছিল বাগড়া। তবে সেটা মিনিট কয়েকের জন্য। বৃষ্টি থামার পর সময় যত গড়িয়েছে, সূর্যের হাসিও দেখা গেছে। তবে বৃষ্টির চোখ রাঙানির এখানেই শেষ নয়। সিলেট টেস্টের প্রথম দুই দিনও হানা দিতে পারে কালবৈশাখী। তাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠের খেলা নিয়ে আছে শঙ্কা। এ সবের মধ্যেই দুই দলের প্রস্তুতি, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা আর নতুন মুখের হাত ধরে ম্যাচ জমে ওঠার সব রসদই প্রস্তুত।

চার মাস পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ১২ এপ্রিল থেকেই সিলেটে ঘাম ঝরাচ্ছে টাইগাররা। ফলে নিজেদের মাঠে কিছুটা এগিয়ে প্রস্তুতিতে। শুক্রবার সকালেও অনুশীলনের সময় খানিকটা বৃষ্টি বাধা হয়ে এসেছিল। তবে মিনিট দশেকের মধ্যেই থেমে যায় বৃষ্টি, পুরো সময়টাই কাজে লাগায় বাংলাদেশ দল। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে প্রথম দিন পুরো অনুশীলনই করতে পারেনি বৃষ্টির কারণে। অবশ্য দ্বিতীয় দিনে ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল তাদের; মাঠে নামার আগেই দেখা মেলে ঝলমলে রোদের। ফলে পুরো সেশন অনুশীলনের সুযোগ পায় সফরকারীরা। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স মনে করেন, প্রস্তুতি যথেষ্ট ভালো হয়েছে। তার কথায়, ‘প্রস্তুতি বেশ ভালো হয়েছে। এখানকার ফ্যাসিলিটিজ আমার মনে হয় স্বপ্নের মতো। আপনি যা চান, তাই করতে পারবেন। হোটেলটা খুব দূরে নয়। আমরা অনেক কাজ করতে পেরেছি এই অল্প সময়েই। আমাদের পরিকল্পনা আছে প্রপার উইকেট প্রস্তুত করার।... আমরা ওখানে গিয়েছি, উইকেট শক্ত, ভালো মনে হচ্ছে; আমাদের দেখতে হবে কাল (আজ) সকালে কেমন হয়। নাহিদ রানার সেই গতিটা আছে, যা অনেক পেসারের জন্য আকাক্সিক্ষত বিষয়। সে যদি সঠিক জায়গায় বোলিং করতে পারে, নিশ্চিতভাবেই জিম্বাবুয়ের জন্য বড় হুমকি হবে।’

মুশফিকুর রহিমের অভিজ্ঞতা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অতীত রেকর্ডের প্রসঙ্গও এসেছে কোচের কণ্ঠে, ‘সে সর্বোচ্চ পেশাদার। আমি জানি সে এখন রান করতে চায়... তাকে নিশ্চিত করতে হবে কতদূর যেতে চায় এই টেস্টে। সেই উইকেটকিপিং করবে না। ব্যাটিংয়েই পুরো মনোযোগ। দলে আরও তিনজন উইকেটকিপার আছে। আমরা এখনো ঠিক করে উঠতে পারিনি কার হাতে গ্লাভস তুলে দেব! তবে আশা করি আগামীকালই (আজ) আমরা ঠিক করে ফেলতে পারব।’ শুক্রবার ছিল আবার জাতীয় দলের প্রধান কোচ সিমন্সের জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে কী উপহার চান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন আর জন্মদিনের উপহার চাওয়ার স্টেজে নেই। তবে তারা যদি উপহার দিতে চায়, প্রথম ম্যাচটি জিতলেই হবে।’

অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে শিবিরেও আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি নেই। দলের মধ্যে দারুণ ইতিবাচকতা বিরাজ করছে এবং সবাই নাকি উদ্দীপ্ত। সংবাদ সম্মেলনে গণামধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শন উইলিয়ামস বলেন, ‘উপমহাদেশের কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে ঘুম, পানি ও খাবারের বিষয়ে সচেতন থাকতে হয়। মানসিকভাবে দৃঢ় থাকাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দিন বৃষ্টি ছিল, তার মধ্যেও অনুশীলন উপভোগ করেছি। ম্যাচে বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়ালেও আমরা সেজন্য প্রস্তুত।’ এই সিরিজে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ নেই। তবে প্রস্তুতি ম্যাচ না থাকাকে সমস্যা মনে করেন না উইলিয়ামস, কারণ অনেকেই ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন। সিলেটের উইকেট সম্পর্কেও রয়েছে তার ধারণা, ‘ঘাস বেশি থাকায় এটি পেসারদের সহায়ক হবে।’ সব মিলিয়ে সিলেটে আবহাওয়া যেমন অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে, তেমনি মাঠে দুই দলের মানসিক ও কৌশলগত লড়াইও টেস্ট ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষা করছে উত্তেজনায় ভরা একটি সপ্তাহ।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত