বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

লিচুর ফুল থেকে মধু আহরণ

আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৮ এএম

দিনাজপুরে লিচুর ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষিরা। দিনাজপুরের লিচুর যেমন সারা দেশে কদর। তেমনি লিচুর ফুল থেকে সংগ্রহ করা মধুরও চাহিদা আছে সারা দেশে। সরকারি হিসাবে, ২০১৫ সালে দিনাজপুরে লিচুর ফুল থেকে মধু সংগ্রহ হয়েছিল ২৩ হাজার ৩৬০ কেজি। ২০২৪ সালে ১০ বছরের ব্যবধানে ১৬৭ জন খামারি ৯ হাজার ১৮২টি মৌবক্স স্থাপন করে ৬৭ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন করেন। সরকারি হিসাবে ৩৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত কেজি হিসেবে যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এবার সরকারি তথ্য এখনো প্রকাশ হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছেন, এবার দিনাজপুরে ৩৩৫ জন খামারি ১২ হাজার মৌবক্স স্থান করেছিলেন।

উত্তরবঙ্গ হানি কমিউনিটির পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘লিচুর ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করায় এ মৌসুমে প্রায় দেড় হাজার মৌ-খামারি প্রায় সোয়া লাখ মৌবক্স স্থাপন করেছিলেন। প্রত্যেক খামারি গড়ে প্রায় ৩ টন করে মধু সংগ্রহ করেছেন।’ মৌচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার লিচুর ফুল ভালো না হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের চেয়ে বেশি মৌচাষি দিনাজপুরে এসেছিলেন। প্রত্যেকে কমপক্ষে ১০০টি মৌবক্স নিয়ে এসেছেন। ১০০ মৌবক্স আছে এমন একজন চাষি কমপক্ষে ৩ হাজার কেজি মধু সংগ্রহ করেন।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ৫ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান হয়েছে। গত বছর মধু সংগ্রহের জন্য ৪ হাজার ৯৫৪টি বক্স স্থাপন করা হয়েছিল। বাগেরহাট জেলা থেকে আসা মৌখামারি আরিফুল ইসলাম জানান, ‘এবার লিচু ফুলের শেষ সময়ে ১৪ দিনে ১০০টি মৌবক্স স্থাপন করে ১ টন মধু উৎপাদন করেছি। যা রীতিমতো রেকর্ড। ৩০০ টাকা কেজি হিসেবে মধু বিক্রি হবে ৩ লাখ টাকা। আসা-যাওয়া এবং খাওয়া বাবদ সর্বোচ্চ খরচ হবে ৫০ হাজার টাকা। মাত্র ১৪ দিনে আয় করেছি আড়াই লাখ টাকা।’ দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. আনিছুজ্জামান জানান, ‘মৌমাছি দিয়ে পরাগায়ন হলে গাছে ২০ ভাগ লিচু বেশি উৎপাদন হয়। বর্তমানে লিচুর ফুল থেকে সবচেয়ে বেশি মধু সংগ্রহ হচ্ছে। লিচুর ফুলের মধু জমাট বাঁধে না। বিসিক ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর অনেক যুবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। স্থানীয়দের আরও প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগাতে পারলে উৎপাদন বাড়বে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন স্থানীয়ারা।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত