বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

যখন ভালো লাগে না কাজ

আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩১ এএম

অফিস সব সময় এক রকম চলে না। মাঝে মাঝে ক্যারিয়ারে আসতে পারে দুঃসময়। কিছুই ভালো লাগে না তখন। কোথাও স্বস্তি মেলে না। চাকরি, মিটিং, কাজ, আড্ডা, গল্প, ঘর-সংসার কিছুই ভালো লাগে না। জীবনের ওপরেই চলে আসে বিতৃষ্ণা। আবার এ রকম অবস্থায় বেশি দিন চলা যায় না। কিছু একটা সমাধান দ্রুত দরকার পড়ে। এ রকম পরিস্থিতি সামলাতে আপনার জন্য রইল দশ পরামর্শ।

এক. এই হতাশাগ্রস্ত অবস্থার পেছনের কারণগুলো খুঁজে বের করা জরুরি। হয়তো আপনি দীর্ঘদিন একটানা একঘেয়ে কাজ করে হাঁপিয়ে উঠেছেন। হয়তো কাজ শেষে আপনার প্রশংসা মেলে না। তাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন সব কিছুর ওপর থেকেই। তাই অফিসের কারণে যদি বিষাদগ্রস্ত হয়ে থাকেন তাহলে কয়েকদিন অফিস থেকে দূরে থাকুন। ছুটি নিন। পরিবারের সঙ্গে দু-একদিনের জন্য হলেও কোথাও বেড়াতে যান। আপনার আনন্দময় অবসর দরকার।

দুই. কোনো কোনো সময় বিশ্রাম নিতে বা বেড়াতে যেতেও ইচ্ছে করে না। আর পরিবারসহ বেড়াতে যাওয়া নিতান্ত কম খরচেরও নয়। সেক্ষেত্রে বাসাতেই সময় কাটাতে পারেন। বই পড়ে, মুভি দেখে সময় কাটাতে পারেন। দেখা করতে পারেন পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে। উদ্দেশ্য একটাই যা আপানার একঘেয়ে লাগে সেসব থেকে কিছুদিন দূরে থাকা।

তিন. সব কিছুই যদি একঘেয়ে আর বিরক্তিকর লাগে তাহলে আপনার কাউন্সেলিং প্রয়োজন। একজন মোটিভেশন কাউন্সেলরই আপনাকে যথাযথ সাহায্য করতে পারবেন। এই মোটিভেশন কাউন্সেলর হতে পারেন আপনার প্রিয় বন্ধুও। যার কাছে এই যন্ত্রময় সময়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারবেন। যিনি অখ- অবসরে আপনার সমস্যার কথা শুনতে পারবেন এবং আপনাকে সহযোগিতা করতে পারবেন।

চার. অফিসে আপনার এই ভালো না লাগা বিষয়গুলো চেপে না রেখে আপনার বস বা ঘনিষ্ঠ কোনো সহকর্মীর সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। তার পরামর্শ নিতে পারেন। যেহেতু আপনারা একই প্রতিষ্ঠানে, একই পরিবেশে কাজ করেন, তিনি আপনাকে অন্যদের চেয়ে অনেক ভালো বুঝতে পারবেন।

পাঁচ. হতে পারে আপনার জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে আপনি সন্দিহান হয়ে পড়েছেন। লক্ষ্য ছাড়া কাজে উৎসাহ পাওয়া অসম্ভব। আপনি হয়তো ভাবছেন, যা করছি কেন করছি, কী হবে এসব করে। কিন্তু ক্যারিয়ারে সফল হতে হলে আপনাকে লক্ষ্য স্থির করতেই হবে। এবং বারবার এই লক্ষ্য পরিবর্তন করা যাবে না। মাঝে মাঝে লক্ষ্য সম্পর্কে এভাবে আপনি সন্দিহান হয়ে পড়লে আপনার সাফল্যে গতি মন্থর হয়ে যাবে। আপনাকে নিজের সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধই করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন লক্ষ্য স্থির করুন এবং লক্ষ্যে অটল থাকুন।

ছয়. যারা অফিসে প্রচুর কাজের প্রেশারে থাকেন তারা কাজের চাপ কমে গেলেই হতাশ হয়ে পড়েন। কেউ কেউ আছেন কাজের চাপ না থাকলে কাজই করতে পারেন না। আপনার হতাশাগ্রস্তের পেছনেই যদি এই কারণ হয় তাহলে আপনি দ্রুত সিরিয়াস কোনো কাজে নিজেকে জড়িত করুন। কাজ না থাকলে বসের সঙ্গে দেখা করুন। কাজ খুঁজে নিন। কিন্তু নিজেকে কখনোই হতাশ হতে দেবেন না।

সাত. হতাশা সংক্রামক। হতাশ ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। আপনি নিজে যখন হতাশ, তখন মনে রাখবেন, আপনি অন্যদেরও প্রভাবিত করে চলেছেন।

আট. আপনার ভালো না লাগা দিনগুলোকে অবহেলা করবেন না। এই মানসিক বিষন্নতা কাটিয়ে ওঠার জন্য উদ্যোগ নিন। যন্ত্রণা লুকিয়ে রেখে সবার সামনে ভালো থাকার অভিনয় করে যাওয়া আপনার জন্য আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিষন্নতা, দুশ্চিন্তা, মানসিক অশান্তি থেকে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। সুতরাং সময় থাকতে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝুন।

নয়. ডায়েরি লেখার অভ্যাস থাকলে। আপনার এই বিষাদময় অভিজ্ঞতার কথা ডায়েরিতে লিখতে পারেন। চাইলে ব্লগেও শেয়ার করতে পারেন। লিখতে পারলে আাপনার ভেতরটা অনেক হালকা হয়ে যাবে। যেমন দুঃখের কথা কারও সঙ্গে শেয়ার করলে ভালো লাগে। আপনি এক ধরনের স্বস্তি অনুভব করবেন।

দশ. সবচেয়ে ভালো হয়, আপনার শখের কোনো কাজে যদি সময় দিতে পারেন। হয়তো আপনি একসময় স্ট্যাম্প সংগ্রহ করতেন, সংগ্রহ করতেন কয়েন বা ব্যাংক নোট। অথবা আপনি টবের বাগানে সময় দেন না বহুদিন। এবার নিয়ে বসুন এই ধরনের সব পুরনো কাজ। আশা করি আপনার ভালো লাগবে। ফিরে পাবেন কাজের উৎসাহ।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত