যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ব্যাপক মাত্রায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আর তাতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে নিহতের সংখ্যা, ধ্বংস হচ্ছে যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে বেঁচে যাওয়া অবশিষ্ট অবকাঠামোগুলো। এরপরও সেখানে নৃশংসতা থামাতে রাজি নন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত শনিবারও উপত্যকাটিতে হামলা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে তার সঙ্গে একমত নয় ইসরায়েলের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষ। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল টুয়েলভ নিউজের এক জরিপে দেখা গেছে, হামাসের কাছে জিম্মি ইসরায়েলিদের দেশে ফেরানোর জন্য যুদ্ধ বন্ধের চুক্তির পক্ষে দেশটির প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ। জিম্মিদের ফেরানোর জন্য যুদ্ধবিরতির দাবিতে এরই মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর হাজার হাজার সাবেক ও বর্তমান সদস্য এক খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগ থেকে এমন চিঠি প্রকাশের সংখ্যা বাড়ছে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে রবিবারও বিক্ষোভ হয়েছে। একই দাবিতে সম্প্রতি একটি পিটিশনে সই করেছে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার ইসরায়েলি।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পেশাগত ব্যর্থতার কারণে গাজায় ১৫ জন জরুরি সেবাকর্মী নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) তদন্তে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সেদিন সেনাসদস্যদের ভুল বোঝাবুঝি এবং আদেশ অমান্য করার একাধিক আলামত পাওয়া গেছে। এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, জরুরি কর্মীদের শত্রুপক্ষের লোক মনে করে গুলি ছুড়েছিল ইসরায়েলি সেনারা। সামারি এক্সিকিউশানের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে আইডিএফ। কোনো সুষ্ঠু প্রক্রিয়া ছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রাণদণ্ড দেওয়ার একটি সামরিক প্রচলনকে বলা হয় সামারি এক্সিকিউশান।
গত ২৩ মার্চ প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) অ্যাম্বুলেন্স, একটি জাতিসংঘের গাড়ি ও একটি ফায়ার ট্রাকের বহরে আইডিএফ গুলি চালায়। এতে ১৪ জন জরুরি কর্মী ও এক ইউএন কর্মী নিহত হন।
তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাস্থলকে ‘শত্রুভাবাপন্ন ও বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র’ উল্লেখ করে দাবি করা হয়, গাড়িগুলো দ্রুত এগিয়ে আসায় মাঠপর্যায়ের কমান্ডার তাৎক্ষণিক হুমকি অনুভব করেন। রাতে দৃশ্যমানতা কম থাকায় অ্যাম্বুলেন্স সঠিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলেও দাবি করা হয়।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি নৃশংসতা থামছেই না। গত রবিবার ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৫ জন নিহত হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, লেবাননেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে অন্তত দুজন নিহত হয়েছে। ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় সানার একটি বাজারের বেশ কিছু বাণিজ্যিক দোকান ধ্বংস হয়েছে।