বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

গোড়ালিতে হাড় বৃদ্ধি পেলে

আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৪ এএম

শরীরে বিভিন্ন হাড়ে অতিরিক্ত হাড় গজায়। এদের মধ্যে ক্যালকেনিয়াম (পায়ের হাড়) অন্যতম। সাধারণত অতিরিক্ত হাড় গোড়ালির নিচে ও  পেছনে গজায়। এ অতিরিক্ত হাড়কে ক্যালকেনিয়াম স্পার বলে। পায়ের সবচেয়ে বড় হাড় ক্যালকেনিয়াম, যা দাঁড়ালে বা হাঁটলে প্রথম মাটির সংস্পর্শে আসে এবং শরীরের পূর্ণ ওজন বহন করে। এর যেকোনো ক্ষুদ্র অসংগতির ফলে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়।

হাড় বৃদ্ধি বা অতিরিক্ত হওয়ার কারণ : অসংগতিপূর্ণ জুতা পরিধান করলে স্পার হয়। লেগের পেশি দুর্বল হলে পায়ের ওপর চাপ পড়ে। ফলে স্পার তৈরি হয়। দীর্ঘদিন ধরে প্ল্যান্টার ফাসা ও টেনডনের প্রদাহ হলে গোড়ালিতে অতিরিক্ত হাড় গজায়। শরীরে অতিরিক্ত ওজন থাকলে স্পার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিস যেমন রিউমাটয়েড ও অসটিওআর্থ্রাইটিসে হিল স্পার হয়। অনেকের বংশাণুক্রমিকভাবে স্পার তৈরি হয়।

লক্ষণ : সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বা অনেকক্ষণ বসার পর পা ফেলতে গেলেই ব্যথা শুরু হয়। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে ব্যথা আস্তে আস্তে কমে আসে। বিশ্রাম অবস্থায় ব্যথা থাকে না। অনেক সময় ব্যথা এত তীব্র হয় যে, পায়ে ভর দেওয়া যায় না। অতিরিক্ত হাড় পেশি, টেনডন, ফাসা, রক্তনালি ও সড়বায়ুকে ট্রাকশন ইনজুরি করে। ফলে ব্যথাসহ টিস্যু জমে থাকে। কখনো কখনো পায়ের তলা লাল হয়, হিলপ্যাড শুকিয়ে যায় এবং পা ফ্ল্যাট হয় অর্থাৎ পায়ের আর্চ নষ্ট হয়ে যায়।

করণীয় : উপযুক্ত মাপের ও নরম জুতা পরলে ব্যথা কমবে। হিল ও আর্চ সাপোর্ট জুতা পরিধান করা একান্ত প্রয়োজন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আড়াআড়িভাবে পায়ের তলা ম্যাসাজ করতে হবে। পায়ের তলার ও লেগের পেশির স্ট্রেসিং, নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে। অ্যানালজেসিক ওষুধ সেবনে ব্যথা কমে আসবে। কখনো কখনো স্থানীয়ভাবে স্টেরয়েড ইনজেকশন পুশ করলে ব্যথা দ্রুত নিরাময় হয়। ইনজেকশন পুশ করতে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, অন্যথায় হিলপ্যাড (গোড়ালি) শুকিয়ে যাবে এবং রোগ ত্বরান্বিত হবে। ফিজিকেল থেরাপি যেমন এসডব্লিউডি, ইউএসটি এবং ওয়াক্স বাথ ব্যবহারেও উপকার পাওয়া যায়।

আর্থ্রোস্কোপিক সার্জারি : রোগের পুনরাবৃত্তি হলে, হিলপ্যাড শুকিয়ে গেলে, পায়ে ভর দিতে অসুবিধা হলে এবং হাড় বাড়তে থাকলে আর্থ্রোস্কোপিক সার্জারির প্রয়োজন হয়। গোড়ালির দুই পার্শ্বে ছোট ছিদ্র দিয়ে আর্থ্রোস্কোপ প্রবেশ করিয়ে অতিরিক্ত হাড় সেভিং করে বের করা হয়। প্ল্যান্টার ফাসা বিচ্ছেদ করা হয়। এতে রোগের উপসর্গ দ্রুত লাঘব হয়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত