উচ্চাঙ্গ সংগীতশিল্পী ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর জন্ম ২৬ এপ্রিল ১৮৮৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তার বাবা সবদর হোসেন খাঁ একজন সংগীতজ্ঞ ছিলেন। ১০ বছর বয়সে তিনি অগ্রজ ফকির আফতাবউদ্দিন খাঁর কাছে সংগীতশিক্ষা শুরু করেন। পরে তিনি ভারতের মাইহারে যান বড় ভাই ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর কাছে এবং তার কাছে সেতার, সুরবাহার এবং বাদনকৌশল ও রাগ রূপায়ণের সূক্ষ্ম বিষয়গুলো নিষ্ঠার সঙ্গে আয়ত্ত করেন। ১৯৩৫ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমন্ত্রণে তিনি শান্তিনিকেতন যান এবং বিশ্বভারতীর যন্ত্রসংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন। উচ্চাঙ্গ সংগীতের ঐতিহ্যবাহী ধারা সচল রাখা, নতুনদের এর প্রতি আকৃষ্ট করা এবং বিশেষভাবে যন্ত্রবাদনের ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘আলম ব্রাদার্স’ নামে একটি বাদ্যযন্ত্র তৈরির কারখানা খুলে গবেষণার মাধ্যমে কয়েকটি নতুন বাদ্যযন্ত্রও উদ্ভাবন করেন। মনোহরা ও মন্দ্রনাদ বাদ্যযন্ত্র দুটি তার সৃষ্টি। তিনি সুরবাহার ও সরোদ যন্ত্রেরও নতুন রূপ দেন। বিশুদ্ধ রাগসংগীতের চর্চা, সংরক্ষণ ও প্রসারের জন্য তিনি ১৯৪৮ সালে কুমিল্লায় এবং ১৯৫৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলাউদ্দিন মিউজিক কলেজ নামে দুটি সংগীত প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। সংগীতে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬০ সালে তিনি গভর্নর পদক, ১৯৬১ সালে তমঘা-ই-ইমতিয়াজ খেতাব এবং ১৯৬১ সালে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাইড অব পারফরম্যান্স লাভ করেন। ২ সেপ্টেম্বর ১৯৬৭ তিন মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি মরণোত্তর স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করেন।